মুঠোফোনে কথা বলার সময় হাঁটছিলেন, এমন মুহূর্তে পেছন থেকে মাথায় গুলি করা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:০২ অপরাহ্ণ
মুঠোফোনে কথা বলার সময় হাঁটছিলেন, এমন মুহূর্তে পেছন থেকে মাথায় গুলি করা হয়।

কক্সবাজারে খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী ওরফে টিপুকে (৫৪) হত্যার ঘটনায় তিন অভিযুক্ত—ঋতু (২৪), শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পু (২৭) এবং গোলাম রসুল (২৫)—আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ।

গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সিগাল পয়েন্টে ঋতুর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন রব্বানী। রাত আটটার দিকে সৈকত থেকে হেঁটে সিগাল হোটেলের দিকে যাওয়ার সময় ঋতুর ইশারায় শেখ শাহরিয়ার ও তার সহযোগীরা রব্বানীকে নজরদারিতে রাখেন। ঝাউবাগানের ভেতরে পৌঁছালে শাহরিয়ার পেছন থেকে রব্বানীর মাথায় গুলি করেন, ঘটনাস্থলেই রব্বানী মারা যান। হত্যার পর শাহরিয়ার এবং রসুল দ্রুত রিকশায় করে পালিয়ে যান।

জবানবন্দি থেকে জানা যায়, পাঁচ মাস আগে শহীদুল ইসলাম নামে এক চরমপন্থী নেতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে এই পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনায় মোট আটজন যুক্ত ছিলেন। শাহরিয়ার, যিনি নিজেও একজন প্রশিক্ষিত অস্ত্রধারী, এই হত্যার নেতৃত্ব দেন। হত্যার জন্য কক্সবাজারকে নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, হত্যাকাণ্ডের দিন রব্বানীকে সৈকতে নিয়ে যান ঋতু। হত্যার আগে রব্বানীর সঙ্গে ঋতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করেন এবং কক্সবাজার ভ্রমণে রাজি করান। হত্যার পর পুলিশ ঋতুর লাগেজের ট্যাগ থেকে তার অবস্থান শনাক্ত করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্তদের জবানবন্দি ও শাহরিয়ারের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল এবং গুলি উদ্ধার করা হয়।

গোলাম রব্বানী খুলনা সিটির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ছিল। হত্যার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিশোধ এবং ব্যক্তিগত শত্রুতার বিষয়টি উঠে এসেছে।