গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা।
গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘাত শেষে অবশেষে কার্যকর হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। আজ শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা এই চুক্তি অনুমোদন করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি আগামী রোববার থেকে শুরু হতে পারে।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ। তিনি জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন সাপেক্ষে রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। তবে তিনি এটিকে ইসরায়েলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হলে এটি গাজার জনগণের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।
এই সংঘাতের প্রেক্ষিতে লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকে ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘর্ষ বাড়ে। গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের ঐকমত্যের খবর প্রথম প্রকাশ করে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার। নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর জিম্মি মুক্তি এবং চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু হবে। আশা করা হচ্ছে, রোববার থেকে প্রথম ধাপে জিম্মি মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় সহিংসতা চলছে। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন এবং আড়াই শতাধিককে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক আক্রমণ চালায়। গাজা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ।
এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি তিন ধাপে বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের মধ্যে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দী নারী ও শিশুদের মুক্তি দেবে এবং গাজা থেকে সেনাদের একটি অংশ সরিয়ে নেবে। দ্বিতীয় ধাপে বাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করবে। তৃতীয় ধাপে মৃত জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে এবং গাজার পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু হবে।
এই চুক্তির বিষয়ে মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটি হয়। যদিও কট্টরপন্থী মন্ত্রীরা চুক্তির বিরোধিতা করেছেন, তবে অধিকাংশ মন্ত্রী এর পক্ষে মত দিয়েছেন। এখন পূর্ণ মন্ত্রিসভা চুক্তিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেই কার্যক্রম শুরু হবে।
আপনার মতামত লিখুন