প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যাবেন।
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কার্যালয়ে গিয়ে শিগগিরই বহুল আলোচিত ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রধান উপদেষ্টা তার এই অভিপ্রায় প্রকাশ করেন বলে তার দপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন কমিশনের সদস্যরা। এ সময় তারা ‘জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল’, যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত, পরিদর্শনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান।
কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করলে গুমের শিকার পরিবারগুলো আশ্বস্ত হবে এবং সাহস পাবে।
বৈঠকে গুমের বিভিন্ন ঘটনার ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরা হয়। এমনকি ছয় বছরের এক শিশুকে গুম করার ঘটনাও আলোচনায় উঠে আসে। এসব শুনে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আপনাদের তদন্তে উঠে আসা ঘটনাগুলো হৃদয়বিদারক। আমি শিগগিরই আয়নাঘর পরিদর্শনে যাব।”
গুমের ঘটনা তদন্তে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয় গত ২৭ আগস্ট।
কমিশন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালের ঘটনাগুলো বিবেচনায় নিচ্ছে। অভিযোগ জানানোর জন্য ১২ সেপ্টেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় এবং সময়সীমা ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
কমিশন ইতোমধ্যে ১৪ ডিসেম্বর একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে, যেখানে গুমের ঘটনায় বিচার শুরু এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সরকারের নির্দেশে এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের উদ্যোগে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে গুম, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনাগুলোর বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে বিভিন্ন বাহিনীর কার্যালয়ে নির্যাতনের জন্য বিশেষ কক্ষ, সাউন্ডপ্রুফ ঘর এবং ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত স্থানে আটক রাখার তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। মার্চে আরও একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে কমিশনের প্রধান জানিয়েছেন, তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে।
আপনার মতামত লিখুন