বিজয়ের আনন্দে বিধ্বস্ত গাজায় ফিরছে ফিলিস্তিনিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ১:২৭ অপরাহ্ণ
বিজয়ের আনন্দে বিধ্বস্ত গাজায় ফিরছে ফিলিস্তিনিরা

১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিরা উত্তর গাজায় ফিরতে শুরু করেছে। বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও ধ্বংসস্তূপের মাঝেই তারা তাদের পুনর্গঠনের কাজ শুরু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ভোর থেকে নেটজারিম করিডোর দিয়ে লাখো ফিলিস্তিনি উত্তর গাজার পথে যাত্রা শুরু করে। বিবিসি জানায়, করিডোর খোলার প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় দুই লাখ মানুষ গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরে গেছে।

ঘরে ফেরার সুযোগ ও মানুষের অনুভূতি
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ঘোষণা দিয়েছিল, স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে পায়ে হেঁটে এবং সকাল ৯টা থেকে যানবাহনে সালাহ আল-দ্বীন সড়ক পার হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।

বাস্তুচ্যুত এক ফিলিস্তিনি আল জাজিরাকে বলেন, “আমি আমার বাড়ি পুনর্নির্মাণ শুরু করব। ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে আবার জীবন গড়ে তুলব।”

আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ বলেন, “ইসরায়েলের ঘোষণা আসার পর উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ও আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। ১৫ মাসের দুঃসহ পরিস্থিতি শেষে এতো সুখী মানুষ এর আগে কখনও দেখা যায়নি।”

ফিলিস্তিনিরা এই মুহূর্তকে ঐতিহাসিক এবং বিজয়ের দিন হিসেবে উল্লেখ করছেন। তাদের মতে, এটি যুদ্ধবিরতির মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

হামাস ও ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া
হামাস এই প্রত্যাবর্তনকে ফিলিস্তিনিদের বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছে। এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, “এই প্রত্যাবর্তন প্রমাণ করে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমির সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সম্পর্কিত। দখলদারদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।”

ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ জানায়, “যারা আমাদের জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার স্বপ্ন দেখেছিল, তাদের জন্য এটি একটি জবাব। আমরা আমাদের ভূমি ও অধিকার রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

ইসরায়েলের আগ্রাসন ও যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
যুদ্ধের শুরুতেই ইসরায়েল উত্তর গাজার ওপর স্থল আগ্রাসনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রায় ১১ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়েছিল। রোববারও নেটজারিম ক্রসিংয়ের কাছে ইসরায়েলি বাহিনী গুলিবর্ষণ করে এবং অন্তত দুই ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে।

এদিকে, ফিরে আসা ফিলিস্তিনিরা ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে তাদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণে কাজ শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতির এই মুহূর্তকে তারা জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছে।

এই ঘরে ফেরা শুধু একটি ভৌগোলিক প্রত্যাবর্তন নয়, বরং এটি একটি প্রতীকী বিজয়, যা তাদের সংগ্রামী মনোভাব ও দৃঢ়তাকে প্রকাশ করে।