‘আমার বাড়ি আর অবশিষ্ট নেই’, ঘরে ফিরে আসা ফিলিস্তিনির আহাজারি।

বিধ্বস্ত গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, তবে সেখানে আর তাদের বাড়ি নেই, বরং ধ্বংসস্তূপ ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। তবুও, যুদ্ধবিরতির পর, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজ ভূমিতে ফিরতে ছুটে এসেছেন। তাদের মধ্যে ৪৪ বছর বয়সি সাবরাইন জানুন তার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন, তিনি বলছেন, “আমরা আবার আমাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরে এসেছি, এতে খুশি হলেও, কান্না আসছে, কারণ আমার বাড়ি আর নেই।”
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর, গাজা উপত্যকার বিভিন্ন অংশে আশ্রয় নেওয়া মানুষরা তাদের নিজ এলাকায় ফিরে আসতে শুরু করেছেন। ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধ শেষে, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হলে, ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরে আসেন। এর মধ্যে সাবরাইনও ছিলেন, যিনি মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। যুদ্ধবিরতির পর, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ গাজার উপকূলীয় সড়ক ‘আল-রশিদ স্ট্রিট’ খুলে দেয়, এবং এই সড়ক ধরে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়ির দিকে ফিরেছেন। এক দিনেই প্রায় তিন লাখ মানুষ ফিরেছেন বলে জানা গেছে।
তবে, যুদ্ধবিরতির পরও গাজার বাসিন্দারা চরম সংকটে রয়েছেন, বিশেষত গর্ভবতী নারী ও শিশুরা। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, গাজার অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে গর্ভবতী নারীরা ও নবজাতকরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলা ও কঠোর অবরোধের কারণে স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট তীব্র হয়েছে। গর্ভবতী নারীরা হাসপাতাল থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন এবং নবজাতকরা প্রয়োজনীয় যত্ন পাচ্ছেন না। এমনকি ইনকিউবেটরের অভাবে একটিতে একাধিক শিশুকে রাখতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই শিশুগুলোর বেশিরভাগই চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে, এবং শীতের কারণে আশ্রয়ের অভাবে অনেক নবজাতকের মৃত্যু হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ইসরাইল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে।
আপনার মতামত লিখুন