মালয়েশিয়ায় কৃষিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন বৃষ্টি খাতুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪:০০ অপরাহ্ণ
মালয়েশিয়ায় কৃষিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন বৃষ্টি খাতুন

সিলেটের মেয়ে বৃষ্টি খাতুন মালয়েশিয়ার কৃষি খাতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার কঠোর পরিশ্রম, উদ্ভাবনী মনোভাব এবং টেকসই কৃষির প্রতি অঙ্গীকার মালয়েশিয়ায় কৃষির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনছে। তিনি মালয়েশিয়ায় প্রথম বাংলাদেশি নারী কৃষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

২০১৭ সালে কোটা দামানসারার সেগি ইউনিভার্সিটির হোটেল ম্যানেজমেন্ট ডিপ্লোমা কোর্সের মাধ্যমে তার যাত্রা শুরু। কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে খাদ্য ঘাটতি এবং নিরাপত্তার সমস্যা তাকে ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার’ প্রকল্প শুরু করতে অনুপ্রাণিত করে, যার মাধ্যমে তিনি ৫৯টি দেশের ৭ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী এবং ৭টি দেশের শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন।

সানওয়ে ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর অধ্যয়নকালে খাদ্য বর্জ্যের ওপর গবেষণা শুরু করেন এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আগামুথু পারিতাম্বির তত্ত্বাবধানে পিএইচডি গবেষণা করেন। তার গবেষণার লক্ষ্য ছিল, এশিয়ান কৃষিতে খাদ্য বর্জ্য ব্যবহার করে টেকসই ফার্টিলাইজার মডেল তৈরি করা।

বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ার শাহ আলমে কেবুনিতি বেরহাদের এগ্রোপার্কে একটি গবেষণামূলক প্রকল্প পরিচালনা করছেন, যেখানে খাদ্য বর্জ্যকে বোকোশি কম্পোস্টিং পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি ও কৃষি উৎপাদন টেকসই করা হচ্ছে। তার উদ্ভাবনী মডেল ইতিমধ্যে কৃষি উৎপাদন দ্বিগুণ করেছে এবং কৃষি বর্জ্য ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করেছে।

বৃষ্টি খাতুন টেকসই কৃষি বিষয়ে আন্তর্জাতিক কী-নোট স্পিকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন এবং বিভিন্ন সম্মেলনে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে মালয়েশিয়ার কাঁচা বাজারে টেকসই প্রকল্প পরিচালনা করছেন এবং খাদ্য বর্জ্য কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করছেন। তার সামাজিক প্রচার অভিযানে মালয়েশিয়ার কমিউনিটিতে সাড়া পড়েছে। ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য হলো টেকসই কৃষি এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির মাধ্যমে এশিয়ান কৃষিতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।