কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, তীব্র ক্ষয়ক্ষতি

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১:৫৮ অপরাহ্ণ
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, তীব্র ক্ষয়ক্ষতি

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত সাত বছরে অন্তত ২২৫টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে কিছু ঘটনাই রহস্যজনক বলে মনে করছেন রোহিঙ্গারা। ২০২১ সালের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে ঘটে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, যেখানে ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে যায় এবং ১৪ জনের মৃত্যু হয়।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে, ২০১৭ সালের পর কিছু নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনুপ্রবেশ করেছেন, যার সংখ্যা প্রায় লাখ খানেক।

সম্প্রতি ৩০ জানুয়ারি উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-ব্লকের সাব ব্লকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৪টি শেল্টার ও একটি দোকান ঘর পুড়ে যায়, তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয়রা জানান, রশিদের ঝুপড়ি ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়, এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের স্বেচ্ছাসেবকরা দ্রুত সাহায্য করেন।

অগ্নিকাণ্ডের পর ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গারা তীব্র দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। কয়েক হাজার রোহিঙ্গা তাদের বসতি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তাদের পোশাক, আসবাবপত্র, খাবার—কিছুই নেই। শীতে তাদের কষ্ট আরও বেড়েছে। একাধিক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, যার বেশিরভাগই রাতে ঘটে। তবে এবার দিনের বেলায়ও এমন ঘটনা ঘটেছে।

রোহিঙ্গা নেতারা এসব অগ্নিকাণ্ডকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের দাবি করেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন থামানোর জন্য এসব অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে এবং যারা ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।