আয়নাঘরের সন্ধানে প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শন, তদন্তে নতুন তথ্য

আয়নাঘর নিয়ে গুম কমিশনের তদন্তে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সারা দেশে ৭০০-৮০০টি আয়নাঘরের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এবং এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এটি শুধুমাত্র ঢাকায় সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়ে ছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর তদন্ত ও গুম কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাজধানীর আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরা এলাকায় তিনটি আয়নাঘর পরিদর্শন করেন। এই পরিদর্শনে দেখা যায়, নির্যাতনের জন্য এসব স্থানে ছোট ছোট কক্ষ তৈরি করা হয়েছিল, কিছু জায়গায় ইট ভেঙে গোপন পথ রাখা হয়েছিল, যেখানে বন্দিরা বছরের পর বছর আটকে ছিলেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, গুম কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে যে এসব আয়নাঘর বিভিন্ন বাহিনীর অধীনে পরিচালিত হতো। আজ পরিদর্শন করা তিনটি আয়নাঘরের মধ্যে দুটি র্যাবের এবং একটি ডিজিএফআইয়ের অধীনে ছিল। এসব জায়গায় কীভাবে বন্দিদের আটক রাখা হতো, কীভাবে নির্যাতন চালানো হতো, তা জানা গেছে। অনেক বন্দি দীর্ঘদিন ধরে সেখানে আটক ছিলেন এবং তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি আয়নাঘর চিহ্নিত করার কাজ চলছে। যারা এই গুম ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুম কমিশন প্রতিটি স্থান তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররাও এসব ঘটনার তদন্ত করছেন। কিছু জায়গায় আলামত নষ্ট করা হয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা এই গুম-খুন-নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা নিজে এসব স্থানে পরিদর্শন করেছেন এবং নির্যাতিতদের কাছ থেকে তাদের অভিজ্ঞতার বিবরণ শুনেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি গোপন বন্দিশালা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন