সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:০৭ অপরাহ্ণ
সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক

ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্তের জিরো লাইনে অস্থায়ী কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৫৫তম সম্মেলনে বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিএসএফ মহাপরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরী।

এই সম্মেলন ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে যায়। ৫ আগস্ট বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর সীমান্ত ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যে ভারতের ত্রিপুরা থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যা হয়। পাশাপাশি মৌলভীবাজার ও ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হন। সর্বশেষ লালমনিরহাটের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা এলাকায় বিএসএফ জিরো লাইনে অস্থায়ী কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করলে সীমান্ত পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বৈঠকে বিজিবি বিএসএফের এই বেড়া নির্মাণের বিষয়ে আপত্তি জানায়। বিজিবি জানায়, দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী জিরো লাইনে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কোনো অনুমতি নেই, বরং তা দেড়শ গজ দূরে স্থাপনের নিয়ম রয়েছে। তবে কিছু এলাকায় একতরফাভাবে বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে, যা চুক্তির লঙ্ঘন। বিজিবি দাবি করে, বেড়া দেওয়ার আগে যৌথ জরিপের কথা থাকলেও তা মানা হয়নি, ফলে বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের সব কার্যক্রম দুই দেশের স্বীকৃত বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই করা হচ্ছে এবং বিজিবির উচিত তা মেনে নেওয়া। তবে বিজিবি জানায়, বোঝাপড়ার শর্ত মানা হয়নি এবং একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

বৈঠকে বিজিবি সীমান্ত হত্যার হার শূন্যে নামিয়ে আনার জোরালো দাবি জানায়। বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, তবে কিছু ক্ষেত্রে অপরাধচক্রের আক্রমণাত্মক আচরণের কারণে গুলি চালানো ছাড়া উপায় থাকে না। এই প্রবণতা রোধে দুই দেশের সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এছাড়া বৈঠকে সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ, অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।