যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমানোর ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এর প্রভাব পড়ছে।

মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাস করলেও ১৯৮০-এর দশকে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়, যার ফলে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ২০১৭ সালের সামরিক অভিযান শেষে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা আবার বাংলাদেশে প্রবেশ করে, যা জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বর্তমানে, ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।
এই শরণার্থীরা মানবিক সহায়তার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল, কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে সহায়তা কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর রোহিঙ্গাদের জন্য ৩০ কোটি ১০ লাখ ডলার দান করেছে, যা বৈদেশিক সাহায্যের ৫৫ শতাংশ। তবে, ট্রাম্প প্রশাসন জানুয়ারির শেষ দিকে অধিকাংশ মার্কিন সহায়তা বন্ধ করার ঘোষণা দেয়।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান আরব নিউজকে জানান, মার্কিন বাজেট কাটছাঁট সরাসরি রোহিঙ্গাদের উপর প্রভাব ফেলবে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র এই তহবিলের ৫০ শতাংশের বেশি প্রদান করে। এতে স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও পুষ্টি খাতে গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক হাসপাতাল তাদের সেবা সীমিত করেছে এবং যদি মার্চের মধ্যে অর্থায়ন না মেলে, তাহলে কিছু হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
মিয়ানমারে নতুন সহিংসতার কারণে রোহিঙ্গা সংকট আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষত যখন এই অঞ্চলে নতুন করে ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবাহিত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য বৈদেশিক সহায়তা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং কিছু স্বাস্থ্য সংস্থা কর্মীদের ছাটাই করেছে।
মিজানুর রহমান বলেন, যদি মার্কিন সহায়তা বন্ধ হয়, তবে অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে, এবং তহবিল সংগ্রহের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে রোহিঙ্গাদের জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
আপনার মতামত লিখুন