রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ইইউর ৬৮ মিলিয়ন ইউরো অনুদান

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার জন্য এ বছর ৬৮ মিলিয়ন ইউরো অনুদান দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইকুয়ালিটি, প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট) কমিশনার হাদজা লাহবিব এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই অর্থ বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সহায়তায় ব্যবহৃত হবে।
সোমবার (৩ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। ইইউ কমিশনার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ইইউর অর্থ সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট মোকাবিলায় এটি যথেষ্ট নয়। তিনি সতর্ক করে বলেন, তহবিলের ঘাটতির কারণে ক্যাম্পের পরিস্থিতি আরও অবনতির ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটকে বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় ইস্যু’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর এ সংকট চলছে, কিন্তু এখনো কোনো সমাধানের দেখা মেলেনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবও বাংলাদেশ সফরে আসছেন বলে জানান তিনি।
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা ব্যবস্থাপনা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার নিয়ে আলোচনা হয়। ড. ইউনূস নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য ইইউর সহযোগিতা কামনা করেন, যা বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সহায়ক হবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাবে। তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটান উভয়ই বাংলাদেশকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহে আগ্রহী।
ইইউ কমিশনার জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইইউ জলবায়ু প্রস্তুতি কৌশল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘ভালো অনুশীলন’ বিনিময়ে আগ্রহী।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। লাহবিব বলেন, পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রতিরোধ থাকলেও, বাংলাদেশ সরকারকে ইইউর সমর্থন অব্যাহত থাকবে। প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এটি সম্ভবত এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন