নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে সুপারিশের বিষয়ে ভিন্নমত জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্তা কমিশনকে চিঠি দিল ইসি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশের বিষয়ে ভিন্নমত জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্তা কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ) ইসি সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্তা কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বরাবর চিঠিটি পাঠানো হয়। ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, কমিশন মনে করে যে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে তাদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে।
ইসি চিঠিতে উল্লেখ করেছে যে, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের সুপারিশ তাদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ বর্তমানে ভোটার, জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা বিবেচনায় সীমানা নির্ধারণ করা হয়। ইসি মনে করে, গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে জনগণ আসায় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন হতে পারে, তবে এটি ইসির আওতায় থাকা উচিত। এছাড়া, নির্বাচনের ফলাফল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সার্টিফাই করার সুপারিশের বিরোধিতা করে ইসি জানায়, নির্বাচন ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশিত হওয়া যথেষ্ট, এবং ফলাফল প্রদান করার ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার সন্তুষ্ট হলে সেটিই যথাযথ।
ইসি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সেবা অন্য সংস্থায় স্থানান্তর করার সুপারিশও সমর্থন করে না এবং জানায় যে ২০০৭ সাল থেকে তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ১৮৩টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে এনআইডি সেবা প্রদান করছে, যা কার্যকরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সংস্কার কমিশনের সুপারিশে নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা ও শাস্তির ব্যবস্থা কঠোর করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধেও মত প্রকাশ করেছে ইসি। তাদের মতে, নির্বাচনের পরে নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি আইনি জটিলতায় না গিয়ে দ্রুত অভিযোগের নিষ্পত্তি করা উচিত।
ইসি সচিব বলেন, তারা চিঠি পাঠিয়েছে কারণ তারা মনে করে এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে তাদের ক্ষমতা খর্ব হবে এবং তাদের দায়িত্ব হলো নির্বাচন ব্যবস্থার কার্যকারিতা বজায় রাখা। নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর বিষয়ে আলোচনা চলবে, তবে ইসি তার স্বাধীনতা ও কার্যক্ষমতা বজায় রাখার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন