ছিনতাই ও অপহরণের ঘটনা বেড়েছে, তবে তিন ধরনের অপরাধের হার কমেছে।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে সামগ্রিক অপরাধের হার ৬.১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতা ও অপহরণের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। খুনের ঘটনাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ধর্ষণ, চুরি ও সিঁধেল চুরির মতো অপরাধের সংখ্যা কমেছে।
২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত ধরনের অপরাধের মোট সংখ্যা ছিল ১৩,৪৯৬, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১২,৭১৪। অর্থাৎ অপরাধের হার বেড়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ফলে পুলিশের কার্যক্রমে বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়। এর ফলে অপরাধের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাত মাস পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ রয়েছে।
পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা ডাকাতি, দস্যুতা, অপহরণ ও হত্যার মতো অপরাধ সংঘটিত করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডাকাতি, দস্যুতা ও অপহরণের ব্যাপক বৃদ্ধি
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সাত মাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৪২৬টি, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৮২টি। এতে ডাকাতির হার ১৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দস্যুতার ঘটনাও ৪১ শতাংশ বেড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
অপহরণের ঘটনাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। গত সাত মাসে ৫৪৮টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৯৪টি। অর্থাৎ অপহরণের হার ৮৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কমেছে ধর্ষণ, চুরি ও সিঁধেল চুরি
অপরদিকে, কিছু অপরাধের হার হ্রাস পেয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা ৯.৮ শতাংশ, চুরি ১৪ শতাংশ এবং সিঁধেল চুরি ৬.৫ শতাংশ কমেছে।
খুনের মামলার সংখ্যা বেড়েছে
গত সাত মাসে দেশে খুনের মামলা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৮৪০, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১,৬৮০। তবে এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত ৯৮৬টি খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে নতুন সরকার আসার পর। এ মামলাগুলো বাদ দিলে, খুনের হার ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও অপরাধ বৃদ্ধির কারণ
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা কমে যাওয়া, বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থার অভাব এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফলে অপরাধ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পরিসংখ্যান নয়, অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাও জরুরি। সমাজে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিটি অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন