মৃত ব্যক্তিদের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে সিম জালিয়াতি করত চক্রটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
মৃত ব্যক্তিদের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে সিম জালিয়াতি করত চক্রটি

একটি সংঘবদ্ধ চক্র মৃত ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহ করে সেখানে থাকা আঙুলের ছাপ নকল করত। এই ছাপ রাবারে তৈরি করে তা ব্যবহার করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন সিম নিবন্ধন করা হতো। এ ছাড়া, বন্ধ থাকা সিমগুলোও একইভাবে পুনরায় চালু করা হতো। এসব সিম ব্যবহার করে মোবাইল আর্থিক সেবার (MFS) গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা, ওটিপির মাধ্যমে বিভিন্ন ভাতার টাকা আত্মসাৎ এবং অনলাইনে পণ্য বিক্রির নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো।

শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান এক সংবাদ সম্মেলনে চক্রটির কার্যক্রম সম্পর্কে জানান। তিনি বলেন, গত দুই দিনের অভিযানে চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁদের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হাফিজুল ইসলাম ওরফে প্রিন্স (২৯), আজিজুল হক (২৪) ও তানভীর রহমান ওরফে কাব্য (২৬)। এদের মধ্যে হাফিজুল ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাসিন্দা, আজিজুল টাঙ্গাইলের মধুপুরের এবং তানভীর টাঙ্গাইলের নাগরপুরের বাসিন্দা। তাঁরা ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন ভাড়া বাসায় থেকে এই প্রতারণার কাজ চালাতেন।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে চক্রের মূলহোতা হাফিজুল ইসলামকে এবং শুক্রবার রাতে আজিজুল ও তানভীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নগরের গোহাইলকান্দি এলাকার একটি ভাড়া ফ্ল্যাট ব্যবহার করা হতো।

তল্লাশিতে পুলিশ চক্রটির কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, রাবার পরিষ্কারের রাসায়নিক, ফিঙ্গার হিটার মেশিন, গ্রামীণফোনের সিমের স্টিকার ২৫০টি, আঙুলের ছাপযুক্ত নেগেটিভ ৩০টি, ২০০টি রাবারের টুকরা, এবং আঙুলের ছাপ সংরক্ষণের বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করেছে।

গ্রেপ্তার হওয়া হাফিজুল ইসলাম পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে, অনলাইনের মাধ্যমে তার কাছে সিম নিবন্ধনের জন্য অর্ডার আসত। হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য এসব সিম ব্যবহার করা হতো।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলায় আরও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “পুরো চক্রটিকে ধরতে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে এনে আরও তথ্য বের করা হবে।”