সৌদিতে কৃষ্ণসাগরে যুদ্ধবিরতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত।

সৌদি আরবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। সোমবার তাঁদের আলোচনার মূল বিষয় ছিল কৃষ্ণসাগরে সামুদ্রিক যুদ্ধবিরতি। বড় পরিসরে যুদ্ধবিরতির আগে আংশিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।
রোববার ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সোমবার রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস একে ‘শাটল কূটনীতি’ বলে অভিহিত করেছে, যেখানে একটি তৃতীয় পক্ষ দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টা চালায়।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইল ওলাৎজ জানান, রিয়াদে একই হোটেলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে, যাতে তারা কৃষ্ণসাগরে যুদ্ধবিরতি এবং নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে পারে। আলোচনায় যুদ্ধবন্দী বিনিময় ও ইউক্রেন থেকে শিশুদের ফেরত দেওয়ার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে হোয়াইট হাউস ও পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন, আর রাশিয়ার পক্ষ থেকে রয়েছেন সাবেক কূটনীতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। কৃষ্ণসাগরে নৌযানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আলোচনার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
পুতিন যুদ্ধবিরতির জন্য শর্ত দিয়েছেন—ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের আশা পরিত্যাগ করতে হবে এবং রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। পশ্চিমা দেশগুলো পুতিনের ছাড় দেওয়ার বিষয়ে সন্দিহান, কারণ তিনি তার পূর্বের দাবিগুলো থেকে সরে আসেননি।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচল নিরাপদ করতে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হবে। ২০২২ সালে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রপ্তানির একটি চুক্তি হয়েছিল, তবে ২০২৩ সালে রাশিয়া তা থেকে সরে আসে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ আলোচনায় ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং জানিয়েছেন, জ্বালানি ও অবকাঠামো সুরক্ষার বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং বলেছেন, পুতিনের ইউরোপ দখলের কোনো পরিকল্পনা নেই, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার পরিস্থিতির থেকে ভিন্ন।
আপনার মতামত লিখুন