তাসনিম জারাকে সারজিস আলমের উত্তর: একটি রাজনৈতিক বিতর্ক

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ৪:৩৭ অপরাহ্ণ
তাসনিম জারাকে সারজিস আলমের উত্তর: একটি রাজনৈতিক বিতর্ক

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সম্প্রতি তার এলাকার শতাধিক গাড়ি নিয়ে একটি শো-ডাউন আয়োজন করেছেন, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তার এই শো-ডাউন নিয়ে একদিকে যেমন সমালোচনা, তেমনি অন্যদিকে প্রশংসাও দেখা যাচ্ছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা তার ফেসবুক পেইজে একটি খোলা চিঠি লিখে সারজিস আলমের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, এত বড় কর্মসূচি আয়োজনের জন্য অর্থের উৎস কী এবং জনসমক্ষে এই বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন।

তাসনিম জারার প্রশ্নের পর সারজিস আলম তার ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে এই বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি প্রথমেই বলেছেন, যে কেউ জাতীয় রাজনীতিতে নতুন আসলে, তার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে অসহায় বা নিঃস্ব, এমন ভাবনা ভুল। তার মতে, কিছু রাজনৈতিক নেতারা চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে, তবে তার পরিবার এসব কর্মকাণ্ডে যুক্ত নয়। তিনি দাবি করেছেন, তার পরিবারের এবং আত্মীয়-স্বজনের অতীতের সামর্থ্য রয়েছে, এবং সেটি তিনি কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।

সারজিস আলম আরও বলেন, সামাজিক মিডিয়ায় কিছু বুদ্ধিজীবী রাজনীতির যে ছবি আঁকেন, তা বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার রাজনৈতিক সংস্কৃতি একে অপরের থেকে ভিন্ন, তাই একটি আসনের রাজনীতি অন্য আসনের সঙ্গে তুলনা করা সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন একদিন হবে, কিন্তু তা ধীরে ধীরে এবং সময়ের সাথে হবে, একেবারে হুট করে নয়।

এছাড়া, তিনি বলেন, রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে মাঠে শক্তি ও সামর্থ্য দেখাতে হবে, না হলে সাধারণ মানুষও নেতাকে গুরুত্ব দেবে না। তিনি কিছুটা তিক্ত মন্তব্য করে বলেন, যে সকল নেতা চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও মামলা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তারা আবার সেই কাজগুলোও করছেন। সুতরাং, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন জরুরি, কিন্তু জনগণের চিন্তা-ধারণা পরিবর্তন না হলে তা বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে।

সারজিস আলম তার পোস্টে আরো যোগ করেন, ফেসবুকের রাজনীতি আর মাঠের রাজনীতি এক নয়। তার মতে, মাঠে থাকা এবং নির্বাচনে বিজয়ী হতে গেলে, পুরনো ও নতুন ধারার মিশ্রণ ঘটিয়ে কাজ করতে হবে। তবে তিনি আশাবাদী যে, একদিন রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে, তবে সেটি সময়সাপেক্ষ।

অবশেষে, সারজিস আলম জানান, তার এলাকা সফরের সময় এত মানুষ ও গাড়ি আসা তার জন্য কল্পনাতীত ছিল। তিনি জানিয়েছেন, তার পরিবারের সদস্যরা এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা নিজেদের উদ্যোগে বেশিরভাগ গাড়ি জোগাড় করেছিলেন, এবং তার পরিবার অতীতে এসব খরচ বহন করতে সক্ষম ছিল।