ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর ওপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক সংস্থা কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় খালিস্তানপন্থি নেতাদের গুপ্তহত্যার ষড়যন্ত্রে র-এর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগেই এ সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইউএসসিআইআরএফ-এর ২০২৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হত্যাচেষ্টা করছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা। এর ফলে ওয়াশিংটন ও অটোয়ার সঙ্গে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক শিখ নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবকে অভিযুক্ত করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তবে ভারত সরকার শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ‘নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ হিসেবে দেখলেও এই হত্যাচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
প্রতিবেদনে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বাড়ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালে দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বৈষম্য ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউএসসিআইআরএফ ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্যও মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া, প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনী প্রচারণায় মুসলিমসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছে ও ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে ভারত সরকার এই প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, এটি ‘গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট’ এবং তারা বরাবরই ধর্মীয় বৈষম্য ও নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ভারতকে এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে, তাই দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো বারবার এড়িয়ে গেছে। তবে ইউএসসিআইআরএফ-এর সুপারিশের ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন