বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তাপ ও ট্রাম্পের পাল্টা অবস্থান

বিশ্বজুড়ে ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে বাণিজ্যযুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত, ব্রিটেন, চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মতো একের পর এক দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। যদিও চীন ছাড়া অন্য কোনো দেশ পালটা শুল্ক আরোপ করেনি, তবুও এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাণিজ্যযুদ্ধ এতটা সহজ বিষয় নয়।
চীন যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিপরীতে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে দাবি করেছেন, চীন এই যুদ্ধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি জানান, চীন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৩৪ শতাংশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে, যা অন্যায্য আচরণেরই প্রমাণ। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আর আগের মতো বোকা থাকবে না, বরং চাকরি ও ব্যবসার সুযোগ ফিরিয়ে আনছে। তার ভাষায়, এ এক অর্থনৈতিক বিপ্লব এবং যুক্তরাষ্ট্রই এতে বিজয়ী হবে। তিনি জানান, এরই মধ্যে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ এসেছে এবং তা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, এটি সহজ নয়, তবে শেষ ফলাফল ঐতিহাসিক হবে।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারগুলো অস্থির হয়ে পড়েছে এবং আসন্ন মন্দার সতর্কতা জোরালো হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের জবাবে দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র যেন শুল্ককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে চীনের বৈধ উন্নয়ন অধিকার ক্ষুণ্ন না করে।
অন্যদিকে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ট্রাম্প যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, তা কার্যকর করা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার প্রথম প্রহর থেকে মার্কিন কর্মকর্তারা এই শুল্ক আদায় শুরু করেন এবং ৫৭টি বড় বাণিজ্য অংশীদারের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করা হয়, যা বুধবার থেকে কার্যকর হবে।
এই অবস্থার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার মিত্র ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে সহস্রাধিক বিক্ষোভ মিছিলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ‘ইনডিভাইজিবল’ নামক একটি সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আজরা লেভিন জানিয়েছেন, ট্রাম্প, মাস্ক এবং রিপাবলিকানদের ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট অ্যাগেইন’ পরিকল্পনার বিরোধিতা করতেই এই বিক্ষোভ। তিনি জানান, গণতন্ত্র, সমাজ, শিক্ষা এবং ব্যক্তিগত জীবনে ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপ তারা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।
আপনার মতামত লিখুন