অদ্ভুতুড়ে আউটে জয় গুলশানের, সমালোচনার মুখে মিনহাজুলের স্টাম্পিং

জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ছয় রান, হাতে এক উইকেট। অবনমনের শঙ্কায় থাকা শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের সামনে তখন আশার আলো হয়ে জ্বলছিল জয়। অপরদিকে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব সুপার লিগ নিশ্চিত করার দ্বারপ্রান্তে। এমন সময় ঘটে গেল এমন এক ঘটনা, যা দেখে ধারাভাষ্যকার পর্যন্ত বিস্মিত হয়ে বলেন, “শকিং! আমি এমন কিছু কখনো দেখিনি।” দর্শকদের মনেও জেগেছে প্রশ্ন—এই আউট কি আসলেই খেলার স্বাভাবিক নিয়মে ঘটেছে?
ঘটনার শুরু হয় যখন ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির উইকেটের দিকে এগিয়ে আসেন, আর গুলশানের বোলার নাঈম ইসলাম সেই মুহূর্তে একটি ওয়াইড বল করেন। কিপারের কাছে বল পৌঁছানোর আগেই মিনহাজুলের ব্যাট দাগের ভেতরে নেওয়ার যথেষ্ট সময় ছিল। প্রথম চেষ্টায় স্টাম্প ভাঙতে পারেননি গুলশানের উইকেটরক্ষক আলিফ হাসান। এই ফাঁকে মিনহাজুল ব্যাট দাগের মধ্যে নিয়েছিলেন বটে, কিন্তু সেটি ছিল পুরোপুরি শূন্যে ভাসমান। পরে দ্বিতীয় চেষ্টায় স্টাম্পে বল লাগিয়ে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব নিশ্চিত করে তাদের জয়, আর সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয় তাদের সুপার লিগের টিকিট।
এই অদ্ভুতুড়ে আউট নিয়ে মাঠে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের ক্রিকেটার শামসুর রহমান এই আউটের ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, “সিরিয়াসলি শেইম।” অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এমন পরিস্থিতিতে ব্যাট শূন্যে রেখে মিনহাজুল কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন?
ম্যাচ শেষে ৫ রানের জয় নিয়ে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ১০ ম্যাচে ৬টি জয়ের মাধ্যমে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে উঠে এসেছে। আর শাইনপুকুর, যারা এখনো পর্যন্ত মাত্র একটি জয় পেয়েছে, রয়েছে সবার নিচে।
টস হেরে গুলশান প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪১ ওভারে ১৭৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। তাদের হয়ে সাকিব শাহরিয়ার করেন সর্বোচ্চ ৩৮ রান। শাইনপুকুরের নিয়ন জামান শিকার করেন তিনটি উইকেট। পরে রান তাড়ায় শাইনপুকুরও বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিল। বিশেষ করে শরিফুল ইসলামের ২০ বলে ২২ রানের ইনিংস ম্যাচটিকে করে তুলেছিল উত্তেজনাপূর্ণ। কিন্তু সেই উত্তেজনার মুহূর্তেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় অস্বাভাবিক এক স্টাম্পিংয়ে।
এই আউট নিয়ে সিসিডিএমও খোঁজ নিচ্ছে। সমন্বয়ক সাব্বির আহমেদ রুবেল জানিয়েছেন, তিনি এখনো ম্যাচ রেফারির সঙ্গে কথা বলেননি। তবে যা জানতে পেরেছেন, তাতে আম্পায়াররাও নিশ্চিত নন—মিনহাজুল আবেদীন ইচ্ছা করে এমনটি করেছেন, না কি না বুঝে।
এই ঘটনার দিনই পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের কোচ তার দলের ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধেই ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক ক্রিকেট খেলার অভিযোগ তোলেন। সব মিলিয়ে একদিনেই বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে দুটি বড় বিতর্ক জন্ম দিলো—যার কেন্দ্রবিন্দুতে স্টাম্পিং ও খেলার মনোভাব।
আপনার মতামত লিখুন