জাপানের সমুদ্রতলে প্রাচীন পিরামিড শহরের সন্ধান, বিতর্কে ইতিহাসবিদরা

জাপানের সমুদ্রতলে এক রহস্যময় পিরামিড শহরের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা দেশটির প্রত্নতত্ত্ববিদদের দাবিতে সৃষ্টি করেছে চাঞ্চল্য ও বিতর্ক। ইয়োনাগুনি দ্বীপের উপকূলে, মাত্র ৯০ ফুট গভীরে অবস্থিত এই নিদর্শনগুলোতে মিলেছে পিরামিড আকৃতির গঠন, ইয়োনাগুনি স্মৃতিস্তম্ভসহ নানা প্রাচীন স্থাপত্যের চিহ্ন। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, এই আবিষ্কার ইতিহাসবিদদের মধ্যে যেমন বিস্ময় জাগিয়েছে, তেমনি প্রশ্নের মুখেও ফেলেছে।
প্রথমবার ১৯৮৬ সালে জাপানের রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে, পানির ৮২ ফুট নিচে এমন এক নিদর্শনের দেখা মেলে। এবার ইয়োনাগুনি দ্বীপের কাছে আরও বিস্তৃতভাবে এক প্রাচীন সভ্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা গবেষকদের মতে ১২ হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো হতে পারে। যদি এই অনুমান সত্যি হয়, তবে এটি হবে মিসরের পিরামিডের আগের সময়কার এক বিস্ময়কর সভ্যতা।
গবেষকদের ধারণা, কৃষিভিত্তিক উন্নয়নের সময়েই এ সভ্যতার উৎপত্তি ঘটে। যদিও সভ্যতাটি ১০ হাজার বছরেরও পুরোনো হয়ে থাকে, তবে ইউরোপের প্রাচীন ও হারিয়ে যাওয়া আটলান্টিস সভ্যতার মতো এটিও বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনায় ছিল। তবে সকল গবেষক এই মতের সঙ্গে একমত নন। কেউ কেউ একে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক গঠন বলেই মনে করছেন।
এই বিষয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, ইউটিউবের জনপ্রিয় “জো রোগান এক্সপেরিয়েন্স” পডকাস্টে এই পিরামিড শহর নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন লেখক গ্রাহাম হ্যানকক এবং প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্লিন্ট ডিবল। সেখানে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা যায়। ডিবল জানান, তিনি এতে এমন কিছু দেখেননি যা মানবসৃষ্ট স্থাপত্যের ইঙ্গিত দেয়। বরং এটি প্রাকৃতিকভাবেই গঠিত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে, হ্যানককের মতে সমুদ্রের গভীরে একটি নির্দিষ্ট কোণ থেকে নেওয়া ছবির কারণে এই গঠনগুলো পিরামিডের মতো মনে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এটি প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অফ ফায়ার অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষে পাহাড়ের অংশ ভেঙে গিয়ে এমন গঠন তৈরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
এই আবিষ্কারকে ঘিরে তাই যেমন ইতিহাসের নতুন জানালা খুলছে, তেমনি প্রশ্ন উঠছে—এই নিদর্শন আসলেই মানবসৃষ্ট কিনা, নাকি প্রকৃতিরই এক বিস্ময়কর খেলা।
আপনার মতামত লিখুন