জার্মানিতে তিন বছরে নাগরিকত্ব পাওয়ার বিধান বাতিলের পথে নতুন সরকার

জার্মানির নতুন সরকার নাগরিকত্ব আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ এবং মধ্য বামপন্থি এসপিডি একটি নতুন জোট গঠন করে সরকার গঠনের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তিপত্র অনুযায়ী, তিন বছরে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান বিদায়ী সরকার চালু করেছিল, তা বাতিলের উদ্যোগ নিচ্ছে নতুন এই জোট সরকার।

বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন সরকার বিদেশিদের জন্য নাগরিকত্ব আইন সহজ করে, যেখানে জার্মান সমাজে একীভূত হওয়ার শর্তে তিন বছর অবস্থানের পর নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ রাখা হয়। এই নিয়মে নাগরিকত্ব পেতে আবেদনকারীদের জার্মান ভাষায় সি-১ লেভেলের দক্ষতা এবং সমাজে একীভূত হওয়ার প্রমাণ দাখিল করতে হতো। তবে শুরু থেকেই এই নিয়মের সমালোচনা করে আসছিল সিডিইউ/সিএসইউ, যাদের মতে তিন বছরে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ অত্যন্ত স্বল্প সময়ে নাগরিকত্ব প্রদান করার সমান। তাই নির্বাচনে জয়ী হয়ে নিজেদের অবস্থান বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে দলটি।

নতুন সরকারের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের উদ্যোগে তিন বছরের বিধান বাদ দেওয়া হলেও পাঁচ বছর পর নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম বহাল রাখা হচ্ছে। একইসঙ্গে নাগরিকত্ব আইন সহজ করার অংশ হিসেবে ওলাফ শলৎসের সরকার যে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান চালু করেছিল, তা বহাল রাখার সিদ্ধান্তেই পৌঁছেছে নতুন জোট। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা চাইলে নিজ দেশের পাশাপাশি জার্মান পাসপোর্টও রাখতে পারবেন।

নির্বাচনের আগে কিছু রাজনৈতিক দল এমন নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছিল, যারা সন্ত্রাসবাদ, ইহুদিবিদ্বেষী বা কট্টরপন্থি কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত। সিডিইউ/সিএসইউ এই প্রস্তাবের পক্ষে থাকলেও এসপিডি এবং জার্মান মাইগ্রেশন অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে সমালোচনা করেছিল। শেষ পর্যন্ত নতুন সরকারের জোট চুক্তিতে বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি, ফলে তা আইন আকারে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না।