আন্তালিয়া কূটনৈতিক ফোরামে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি

তুরস্কে চলমান আন্তালিয়া কূটনৈতিক ফোরামে অংশগ্রহণের ফাঁকে তুর্কি টেলিভিশন টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন দেশের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার একটি টেকসই ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে, যাতে ভবিষ্যতে আর কখনও কর্তৃত্ববাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
তিনি জানান, বর্তমান সরকার মানুষের দাবি পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের ত্যাগ ও আন্দোলনের মূল দাবি ছিল এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব হবে। তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, সরকার কখনোই সরাসরি নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলেনি। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে। সরকারের মূল লক্ষ্য হলো অতীতের স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার পুনরাবৃত্তি রোধ করে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলা।
অর্থনীতিকে বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশ একপ্রকার লুটপাটের শাসনে পরিচালিত হয়েছিল, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন থেকে ২০ বিলিয়নে নেমে আসে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সরকার এখন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় বিশেষভাবে ব্যাংকিং খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এটি সরকারের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অংশ। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সম্পর্কে তিনি বলেন, উভয় দেশের সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে গঠিত, এবং নতুন বাস্তবতায় ভারতকে মানিয়ে নিতে হয়তো কিছুটা সময় লাগছে।
তুরস্ক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে তুরস্কের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে। সরকার চায়, তুরস্কের সঙ্গে এক শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠুক এবং সেই লক্ষ্যে দুই দেশই এগিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন