‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’: বৈচিত্র্য ও প্রতিবাদের ছোঁয়ায় বর্ষবরণ শোভাযাত্রা সম্পন্ন

‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’—এই প্রত্যয়ধর্মী স্লোগান নিয়ে ১৪৩২ বঙ্গাব্দের বর্ষবরণ শোভাযাত্রা শেষ হয়েছে এক বৈচিত্র্যময় ও মানবিক আয়োজনে। সোমবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়।
এবারের আয়োজনের অন্যতম ব্যতিক্রম ছিল কৃষক ও রিকশাচালক শ্রেণির অংশগ্রহণ। ঐতিহ্যবাহী সাজে তারা হাতে কুলা, চালুনি, মাছ রাখার খালই এবং সাজানো রিকশা নিয়ে শোভাযাত্রায় যোগ দেন। তাদের হাতে ছিল “নববর্ষ হোক সবার” সহ নানা বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড। এ অংশগ্রহণ সাধারণ মানুষের সংস্কৃতির সঙ্গে শিকড়ের গভীর সংযোগকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিকর্মী, নারী ফুটবলার, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এ উৎসবে অংশ নেন। বিদেশিরাও অংশ নেন বাঙালিয়ানা সাজে—কেউ গলায় বাঁশি ঝুলিয়ে বাজাচ্ছেন, কেউ আবার লাল-সাদা পোশাকে শোভা পাচ্ছেন।
শোভাযাত্রায় ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাতে ব্যবহৃত হয় ফিলিস্তিনের পতাকা ও তরমুজের প্রতীকী মোটিফ। এ ছাড়াও প্রদর্শিত হয় ২১টি শিল্পকর্ম—যার মধ্যে ছিল ৭টি বড়, ৭টি মাঝারি এবং ৭টি ছোট মোটিফ। মূল মোটিফ ছিল ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’। আলোচিত ‘মুগ্ধর পানির বোতল’, পায়রা, মাছ ও বাঘের শিল্পরূপও ছিল নজরকাড়া।
বর্ষবরণের এ আয়োজন প্রমাণ করল, সংস্কৃতির মাধ্যমে প্রতিবাদ, সংহতি এবং সর্বজনীনতা একসাথে তুলে ধরা সম্ভব। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এক সামাজিক-রাজনৈতিক বার্তা বহনকারী ঐতিহাসিক মুহূর্তও।
আপনার মতামত লিখুন