ভুটানে সানজিদার ক্লাব ফুটবল যাত্রা: সময় কাটে জিম, অনুশীলন আর দর্শকদের ভালোবাসায়

বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলের তারকা খেলোয়াড় সানজিদা আক্তার বর্তমানে রয়েছেন ভুটানে, থিম্পু এফসির হয়ে খেলতে। ভুটানের নারী লিগে অংশ নিতে গেছেন বাংলাদেশের আরও ৯ জন নারী ফুটবলার। তবে এই লিগটা বাংলাদেশের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন—খেলার মধ্যেও থাকে লম্বা বিরতি। সানজিদার প্রথম ম্যাচ ১০ মে, তার আগে প্রায় ২০ দিন সময়। তাহলে এই সময়টা কাটে কীভাবে?
সানজিদা নিজেই জানালেন, “জিম, প্র্যাকটিস, আর বিশ্রাম করেই সময় কেটে যাচ্ছে।” ভুটানের ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যেও তিনি আগের অভিজ্ঞতা থেকে মানিয়ে নিতে পারছেন ভালোভাবে। আগেও তিনি দেশের জার্সি গায়ে ভুটানে খেলেছেন, তাই এখন ক্লাবের হয়ে খেলতে গেলেও সেখানকার মানুষ তাকে চেনেন, ভালোবাসেন। “পথে দেখা হলে ভুটানিজরা হাত নাড়ে, স্টেডিয়ামের পুরোনো স্টাফরা শুভেচ্ছা জানায়,”—এভাবেই প্রকাশ করেন দর্শকদের উষ্ণ ভালোবাসা।
সানজিদার স্মৃতিতে রয়েছে ভুটানের মাঠে বাংলাদেশের কিছু ভালোমন্দ মুহূর্ত। একবার এই মাঠেই হেরে পরের রাউন্ডে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। আবার সেই মাঠেই অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ নারী দল। “দুটো প্রীতি ম্যাচও জিতেছিলাম,” বলে নিজের আনন্দঘন মুহূর্তগুলোর কথা স্মরণ করেন তিনি।
ভুটানে থাকলেও ভারতের ইস্ট বেঙ্গল নারী ফুটবল দলের সাফল্যের খবরও রাখছেন সানজিদা। ২০২৪ সালে এই দলেই খেলেছেন তিনি। সেই সময় দল চ্যাম্পিয়ন না হলেও তার একটি গোল ছিল চিরস্মরণীয়—একটি অসাধারণ সেটপিস গোল, যা এখনো চোখে লেগে থাকে ফুটবলপ্রেমীদের। সেই সময় সানজিদাকে নতুন বছরের জন্য আবারও দলে নেওয়ার প্রস্তাব দেয় ইস্ট বেঙ্গল, কিন্তু তিনি রাজি হননি। তার বক্তব্য ছিল—“যদি দলে ভালো মানের খেলোয়াড় না থাকে, তাহলে আমি খেলতে আগ্রহী না।”
এবারের ইস্ট বেঙ্গল দলের কোচ ছিলেন নতুন, তার নিজের পছন্দের খেলোয়াড়দের নিয়েই তিনি দল সাজিয়েছেন, এবং দলটি চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। সানজিদার মতে, “আমার সময় যদি কিছু ভালো খেলোয়াড় আরও থাকত, তাহলে আমরাও ভালো কিছু করতে পারতাম।”
এই মুহূর্তে থিম্পুতে অবস্থান করা সানজিদা শুধু মাঠেই নয়, দর্শকদের হৃদয়েও খেলছেন—ভুটানের ঠান্ডা আবহাওয়ার মাঝে গরম ভালোবাসায় সময় পার করছেন এই প্রতিভাবান ফুটবলার।
আপনার মতামত লিখুন