বাংলাদেশি পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও নিজেকে অস্বীকার করছেন টিউলিপ সিদ্দিক

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ভিডিওতে তাকে স্পষ্টভাবে বলতে শোনা যায়, “আমি বাংলাদেশি নই, আমি একজন ব্রিটিশ নাগরিক।” তবে তার এই দাবির সঙ্গে সরকারি নথি ও উপাত্তের রয়েছে সুস্পষ্ট অসঙ্গতি।
সরকারি রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিক একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তার নামে ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ইস্যু করা হয়। ওই পরিচয়পত্রে তার নাম উল্লেখ আছে ‘টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক’ এবং ঠিকানা লেখা আছে- বাসা/হোল্ডিং: ৫৪, গ্রাম/রাস্তা: ০৫, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ডাকঘর: নিউমার্কেট-১২০৫, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এবং দেশের করদাতা হিসেবেও নিবন্ধিত। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে তিনি প্রথম আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন, যা তার বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আরেকটি প্রমাণ।
২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। ৮০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পাশাপাশি টিউলিপের নামও উঠে আসে। এসব অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি দুদক থেকে আরও জানা যায়, টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড থেকে ‘ঘুষ’ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেছেন—এ অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এসব বিতর্ক ও দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর শক্ত সমর্থন সত্ত্বেও টিউলিপ সিদ্দিককে দেশটির দুর্নীতি নিবারণ-মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়।
আপনার মতামত লিখুন