সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকি ভাতা, বিমা ও পেনশন চালুর প্রস্তাব শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে

সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশনের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের সব ধরনের সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ঝুঁকি ভাতা, স্বাস্থ্য ও জীবন বিমা এবং পেনশন চালু করা অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দ্য নিউজপেপার এমপ্লয়িজ (কন্ডিশন অব সার্ভিস) অ্যাক্ট ১৯৭৪’-এর আদলে একটি পৃথক আইন প্রণয়ন অথবা বিদ্যমান শ্রম আইনে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় সংযুক্ত করা উচিত। এখানে শুধু সংবাদপত্র নয়, রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইনসহ সব মাধ্যমেই কর্মরত সাংবাদিকদের অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ‘সংবাদপত্র শ্রমিক’ শব্দের পরিবর্তে ‘গণমাধ্যম কর্মী’ হিসেবে সংজ্ঞা সম্প্রসারণের সুপারিশও রয়েছে।
এ ছাড়া কমিশন আরও প্রস্তাব দিয়েছে যে, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সকল সাংবাদিকদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগপত্র প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। সুনির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, নির্ধারিত ছুটি এবং নারী সাংবাদিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর করার কথাও বলা হয়েছে। ক্যামেরার পেছনে কাজ করা কর্মীদের ‘চিত্র সাংবাদিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে মাসিক বেতন পরিশোধের তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর বাধ্যবাধকতা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ পুনর্গঠনের সুপারিশও করা হয়েছে, যেন এই ট্রাস্ট বাস্তবিক অর্থেই সাংবাদিকদের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হলে সাংবাদিক সমাজের পেশাগত জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করা যায়।
আপনার মতামত লিখুন