ফ্যাসিবাদী শাসনের উত্থান গণতন্ত্রের ঘাটতির ফল: অধ্যাপক আলী রীয়াজ

বাংলাদেশে গত পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে গণতন্ত্রের ঘাটতির কারণেই দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের উত্থান ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে ‘আম জনতার দল’-এর সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, “গত ৫৩ বছরে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গণতন্ত্রের অভাব এবং কাঠামোগত দুর্বলতা স্পষ্ট। এর ফলেই দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এখন সময় এসেছে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার, যেখানে কেউ গুম, খুন বা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হবে না।”
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য একটি সর্বজনগ্রাহ্য জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা, যা আলোচনার ভিত্তিতে দেশের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্ধারণে সহায়ক হবে। এই কমিশন কোনো রাজনৈতিক শক্তির বিকল্প নয়, বরং একটি অনুঘটক শক্তি, যা টেকসই গণতান্ত্রিক কাঠামো গঠনে ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, “আমরা ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনকাল পেরিয়ে এসেছি। এই সময়ে দেশের মানুষ যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, সেটাই আজকের ঐকমত্যের ভিত্তি।”
সংলাপে ‘আম জনতার দল’-এর সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামান জানান, তারা পূর্বে ‘গণপরিষদ (একাংশ)’ নামে কাজ করলেও বর্তমানে নতুন পরিচয়ে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, “নতুন নামে অংশগ্রহণের কারণে কিছু মতামতে পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে। আজকের আলোচনায় আমরা সংবিধান, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী।”
সংলাপটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।
সূত্র জানায়, কমিশনের দেওয়া ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে আম জনতার দল ১৩৮টিতে একমত, ১২টিতে দ্বিমত এবং ১৫টিতে আংশিক মতামত দিয়েছে। ১টি প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন