রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ: এক যুগের পরেও অবিচারের শিকার শ্রমিকরা

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক। আজও সেই ভয়াবহ স্মৃতি দগদগে ক্ষতের মতো রয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া শ্রমিকরা শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। অনেকে এখনো বেঁচে থাকার সংগ্রামে প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন। তাদের অনেকের পরিবার এখনও চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত। এই দীর্ঘ ১২ বছরে বিচার হয়নি দোষীদের, এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এখনো সুবিচারের জন্য অপেক্ষা করছেন।
শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে জীবিত ফিরে আসা গার্মেন্টস কর্মী জেসমিন, শীলা বেগম, আজিরন বেগম, নিলুফার ইয়াসমিন এবং হাওয়া বেগমসহ আরও অনেকের অবস্থা এখনো শোচনীয়। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন, আর অনেকের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। এই এক যুগে অনেক কিছু বদলালেও, বদলায়নি ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জীবন। তারা এখনও অপেক্ষায় সুবিচারের।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং স্মৃতিফলক স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছে। ১১টি শ্রম মামলা এখনও বিচারাধীন, এবং ক্ষতিপূরণ মাত্র ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা বর্তমান বাস্তবতায় অপ্রতুল এবং অযৌক্তিক। ব্লাস্টের পক্ষ থেকে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, গণমাধ্যমে অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ এবং আহতদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও পুনর্বাসনসহ নানা সুপারিশ করা হয়েছে।
রানা প্লাজার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতার অভাব এবং দোষীদের বিচার না হওয়া, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক বাস্তবতা।
আপনার মতামত লিখুন