বিশ্বব্যাংককে না জানিয়েই সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা ভারতের

একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি (Indus Waters Treaty – IWT) স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংককে কিছুই জানায়নি ভারত। ভারতের সরকারি সূত্রের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এ তথ্য জানিয়েছে।
১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, ছয় বছর আলোচনার পর তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির অধীনে পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলো—সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব—পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত হয়, আর পূর্বাঞ্চলের রবি, বিয়াস ও শতদ্রু ভারতের জন্য বরাদ্দ করা হয়। এতে বাঁধ, খাল, ব্যারেজ ও জলসম্পদ উন্নয়নেও সহযোগিতা ও অর্থায়নের ব্যবস্থা ছিল।
চুক্তির আওতায় দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত হয় স্থায়ী সিন্ধু কমিশন, যার লক্ষ্য ছিল পানি বণ্টন সংক্রান্ত যেকোনো বিরোধ মীমাংসা করা।
তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে নয়াদিল্লি। এরপরই ভারত ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও নীতিগত কিছু পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত।
চুক্তি স্থগিতের বিষয়ে ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব দেবশ্রী মুখার্জি পাকিস্তানের সচিব সৈয়দ আলী মুর্তজাকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেন যে, চুক্তি ‘অবিলম্বে স্থগিত’ করা হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাংকের একজন মুখপাত্র বলেন, চুক্তি নিয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজস্ব সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেই পারে এবং এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক কোনো মন্তব্য করছে না।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পাকিস্তানকে চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, ফলে আলাদাভাবে বিশ্বব্যাংককে জানানো প্রয়োজন নেই।
এই পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন