বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্যালিফোর্নিয়ার উত্থান: জাপানকে টপকে চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির স্থান অধিকার

বিশ্ব অর্থনীতির র্যাংকিংয়ে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে মার্কিন অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ব্যুরোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জিডিপির ভিত্তিতে ক্যালিফোর্নিয়া জাপানকে পেছনে ফেলে এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) দাঁড়িয়েছে ৪.১০ ট্রিলিয়ন ডলার, যেখানে জাপানের জিডিপি ৪.০১ ট্রিলিয়ন ডলার। ফলে ক্যালিফোর্নিয়া এখন কেবল যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জার্মানির পরে অবস্থান করছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এই অর্জনকে ‘বিশ্বের গতি নির্ধারণকারী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ক্যালিফোর্নিয়া শুধু বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে না—বরং আগামী দিনের দিকনির্দেশনা তৈরি করছে।” তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কিছু নীতিগত চ্যালেঞ্জ এই অগ্রযাত্রাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
নিউসম অভিযোগ করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘বেপরোয়া শুল্কনীতি’ ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নীতির বিরুদ্ধে তিনি আইনগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে চীনের পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, আর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫% পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার এই উত্থানের পেছনে রয়েছে রাজ্যটির শিল্প, কৃষি, প্রযুক্তি ও বিনোদন খাতের বিশাল অবদান। যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ব্যস্ততম সমুদ্রবন্দর—লং বিচ ও লস অ্যাঞ্জেলেস—এ রাজ্যেই অবস্থিত, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার ভূমিকা আরও দৃঢ় করে।
অন্যদিকে জাপানের অর্থনৈতিক পতনের পেছনে রয়েছে নিম্ন জন্মহার, বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আধিক্য, শ্রমশক্তির ঘাটতি এবং সামাজিক খাতে ব্যয়ের চাপ। আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে জাপানের অর্থনীতি আরও সংকুচিত হতে পারে।
নিউসম শেষ পর্যন্ত বলেন, “এই অর্জন উদযাপনযোগ্য, কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের দায়িত্বশীল হতে হবে। ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতি শুধুমাত্র এই রাজ্যের নয়—এটি পুরো জাতির শক্তির ভিত, এবং এটিকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।”
আপনার মতামত লিখুন