কাশ্মীরি ছাত্রদের ওপর ভারতে উগ্র ডানপন্থী গোষ্ঠীর হামলা ও বর্ণবৈষম্য

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধর শহরে হাঁটতে হাঁটতে আসিফ দার হঠাৎ বুঝতে পারলেন যে, তার দিকে সকলের দৃষ্টি ছিল, এবং এসব দৃষ্টি বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না। তিনি আল জাজিরাকে জানান, “ভিড়ের প্রতিটি মানুষের চোখেই প্রতিশোধের ভাব ফুটে উঠেছিল।”
আসিফ এবং তার বন্ধু যখন একটি এটিএম বুথে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি তাদের জাতিগত পরিচয় সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। আতঙ্কিত হয়ে তারা সেখান থেকে চলে আসেন। পরদিন, ২৩ এপ্রিল, আসিফ যখন দুধ কিনতে বের হন, তখন তিনজন লোক তাকে ইসলামোফোবিক গালিগালাজ করেন। তাদের মধ্যে একজন চিৎকার করে বলেছিলেন, “সে কাশ্মীরি, তাদের কারণেই সবকিছু ঘটে।”
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীরা পর্যটকদের ওপর হামলা চালালে ২৬ জন নিহত হন এবং আরও ১৭ জন আহত হন। ভারত সরকার পাকিস্তানকে এই হামলায় জড়িত হওয়ার অভিযোগ করে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং কেবল কাশ্মীরি জাতীয়তাবাদকে নৈতিক সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়েছে।
ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা উগ্র ডানপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীর আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন যে, তারা তাদের সহপাঠীদের, বাড়িওয়ালা এবং দোকানদারদের কাছ থেকে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। আসিফ বলেন, “অন্য কেউ এই হামলা করেছে, এখন আমাদের মূল্য দিতে হচ্ছে।”
কাশ্মীরি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভারতে চলমান ঘৃণামূলক প্রচারণা এবং বর্ণবাদী আচরণের ফলে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা শঙ্কিত এবং নিজেদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আসিফ জানান, তিনি পড়াশোনা করতে ভারতের শহরে এসেছিলেন, কিন্তু এখন তার মাথা ঠিক কাজ করছে না এবং তিনি শঙ্কিত, “যেকোনো মুহূর্তে কিছু ঘটতে পারে।”
কাশ্মীরি-বিরোধী ঘৃণার ঝড় এবং মুসলিম-বিরোধী কর্মকাণ্ডের মধ্যে, ভারতের এই পরিস্থিতি কাশ্মীরি জনগণের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন