আইনি জটিলতার মুখে ডিএসসিসির নতুন মেয়র ইশরাক হোসেনের মেয়াদকাল

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে শপথ গ্রহণ করলেও তিনি কতদিন মেয়রের দায়িত্বে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে আইনি অনিশ্চয়তা।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। চলতি বছরের ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল রায়ে নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে এবং আগের গেজেট বাতিল করে।

রায় কার্যকরে দ্বিধায় থাকা ইসি আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়েই রোববার রাতে গেজেট প্রকাশ করে, যা বিশ্লেষকদের মধ্যে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—গেজেট প্রকাশে কি রাজনৈতিক চাপ কাজ করেছে?

আইন অনুযায়ী, ডিএসসিসির মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ মে। ফলে শপথ নিলেও ইশরাকের কার্যকাল হতে পারে মাত্র ১৫-১৬ দিন। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে ইশরাক যদি পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান, তবে তাঁকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, বর্তমান আইনে এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। ফলে শপথ নিলেও মেয়াদকাল নিয়ে আইনগত জটিলতা থেকেই যাচ্ছে।

ইতোমধ্যে ১৯ আগস্টের একটি প্রজ্ঞাপনে ঢাকার দুই মেয়রসহ ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং ডিএসসিসির মেয়র পদ বর্তমানে শূন্য। এ অবস্থায় উপনির্বাচন ছাড়াই কাউকে গেজেটের মাধ্যমে বিজয়ী ঘোষণা করার ঘটনায় শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।

নির্বাচন কমিশনের দাবি, গেজেট প্রকাশের পেছনে “নৈতিক চাপ” কাজ করেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠলে ভবিষ্যতের নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে আরও অবিশ্বাস জন্ম নিতে পারে।