লিভারপুলের শিরোপা উল্লাস: ‘তুমি কখনো একা হাঁটবে না’

‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’—এই কথাটি লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের ইতিহাসের সঙ্গে মিশে গেছে। ক্লাবটি যখন তাদের ইতিহাসের ২০তম প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতেছিল, তখন অ্যানফিল্ডে এই স্লোগানটি মুখরিত ছিল। লিভারপুল ফুটবল ক্লাবটি ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯২ সালে তাদের শতবর্ষ উদযাপনে ক্লাবের লোগোর সঙ্গে ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’ যুক্ত করা হয়। এই স্লোগানটির মতোই কখনো একা হাঁটতে হয়নি লিভারপুলকে। তাদের সাফল্যের পেছনে সমর্থকদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা এবং তাদের সঙ্গে শিরোপা উদযাপন ছিল সবসময়ই।

লিভারপুল ফুটবল ক্লাব একসময় একটি সাধারণ ক্লাব থেকে আজ ইংলিশ ফুটবলের সাম্রাজ্যের রাজা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার মালিক। টটেনহ্যামের বিপক্ষে খেলার আগে লিভারপুল জানত, এই ম্যাচে হার না মানলেই তারা শিরোপা নিশ্চিত করবে। সালাহ-ম্যাক অ্যালিস্টারের জন্য এটি কঠিন কাজ ছিল না এবং তাই অ্যানফিল্ডে শিরোপা উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। ৬১ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতা সম্পূর্ণ স্টেডিয়াম একেবারে ‘লাল সমুদ্রে’ পরিণত হয়। ম্যাচে লিভারপুল ৫-১ গোলের ব্যবধানে টটেনহ্যামকে হারিয়ে চূড়ান্তভাবে শিরোপা নিশ্চিত করে।

শুধু স্টেডিয়ামই নয়, গোটা লিভারপুল শহরও উদযাপনে মেতে ওঠে। ক্লাবের জার্সি পরিহিত সমর্থকরা স্টেডিয়ামের বাইরে রাজপথে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। পুরো শহর রূপান্তরিত হয়ে লাল সমুদ্রে পরিণত হয়।

মৌসুমের শুরুতে জার্মান কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের পরিবর্তে আর্নে সল্ট দায়িত্ব নেন এবং পাঁচ বছর পর লিভারপুলকে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা এনে দেন। এই শিরোপা উদযাপন ছিল সল্টের জন্যও বিশেষ। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্ত থেকে আমি এই মহান ফুটবল ক্লাবের ইতিহাসের অংশ।’ শিরোপা উল্লাসের সময় কোচসহ পুরো দল সমর্থকদের শ্রদ্ধা জানান এবং এই অর্জনের পিছনে যাদের অবদান ছিল, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

চলতি মৌসুমের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় ছিলেন মোহাম্মদ সালাহ। তিনি প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে রেকর্ড গড়েন এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনটি দখল করেন। পাঁচ বছর আগে এই ক্লাবের জন্য শিরোপা জিতেছিলেন, তবে এইবার সমর্থকদের সামনে তা আরও বিশেষ ছিল। সালাহ নিজেই বলেন, ‘ভক্তদের সামনে প্রিমিয়ার লিগ জেতা সত্যিই বিশেষ কিছু। এটি পাঁচ বছর আগের চেয়ে অনেক বেশি আনন্দের, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’