সংবিধান সংস্কার, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিরোধ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ
সংবিধান সংস্কার, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিরোধ

বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি এবং সাংবিধানিক সংস্কারের পরিধি নিয়ে বিতর্ক চলছেই। বর্তমানে সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার বিষয়ে দেশীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি শুরু থেকেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রতিরোধ করেছে। তবে জামায়াতে ইসলামী আনুষ্ঠানিক আলোচনায় এই দু’টি প্রস্তাবই মেনে নিয়েছে এবং সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে করার দাবি জানিয়েছে।

সংবিধান সংস্কার কমিশন ৩০০ আসন বিশিষ্ট সংসদের নিম্ন কক্ষ এবং ১০০ আসন বিশিষ্ট উচ্চ কক্ষ গঠনের সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশে বিএনপি ও জামায়াত উভয়ই দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের পক্ষে, তবে নির্বাচনের পদ্ধতিতে তাদের মতামত আলাদা। বিএনপি বর্তমানে বিদ্যমান নির্বাচনী পদ্ধতিতেই নিম্ন কক্ষের নির্বাচন করতে চায়, অন্যদিকে জামায়াত উভয় কক্ষের নির্বাচনই পিআর পদ্ধতিতে করতে চায়।

পিআর পদ্ধতির পক্ষে জামায়াতের যুক্তি হচ্ছে, এই পদ্ধতিতে ভোটাররা শুধু দলের প্রতি ভোট দেবেন, কোনো প্রার্থী নির্বাচন করবেন না, এবং দলের ভোটের অনুপাতে সংসদীয় আসন বণ্টিত হবে। জামায়াতের নেতারা বলেন, এটি দেশের বর্তমান দুর্নীতি এবং ভোটবিহীন নির্বাচনের সমস্যাগুলি সমাধান করবে। তাদের মতে, পিআর পদ্ধতি পৃথিবীর ৬০টির বেশি দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এতে টাকার খেলা বন্ধ হয়ে যাবে।

বিএনপি এর বিপরীতে মত প্রকাশ করে বলেছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হওয়া উচিত। বিএনপির মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার প্রস্তাব জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীত। তারা সংসদ নির্বাচনের জন্য জনগণের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার কথা তুলে ধরে সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব খারিজ করেছে।

এদিকে, জামায়াত এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি ইসলামি রাজনৈতিক দল এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পিআর পদ্ধতির পক্ষে রয়েছে। তারা সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে চায় এবং স্থানীয় সরকারের নির্বাচনও সংসদ নির্বাচনের আগে করতে হবে বলে দাবি করছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে দুর্নীতি এবং ভোটবিহীন ফলাফল বন্ধ হবে এবং এটি টাকার খেলা বন্ধ করতে সহায়ক হবে।

এভাবে, সংবিধান সংস্কার এবং নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে, এবং পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে একটি সুরাহা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।