বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচিতে অগ্রগতি সত্ত্বেও ৫ লাখ শিশু ঝুঁকিতে: ইউনিসেফ, গ্যাভি ও ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তা

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১:২২ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচিতে অগ্রগতি সত্ত্বেও ৫ লাখ শিশু ঝুঁকিতে: ইউনিসেফ, গ্যাভি ও ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তা

বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ–২০২৫ উপলক্ষে ইউনিসেফ, গ্যাভি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশের শিশু টিকাদান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, যদিও দেশে টিকা প্রদানের হার বেড়েছে এবং ৮১.৬ শতাংশ শিশু টিকার আওতায় এসেছে, তবুও এখনও প্রায় ৫ লাখ শিশু সময়মতো সব ডোজ টিকা পায় না। এই উদ্বেগজনক চিত্র সামনে এসেছে সোমবার প্রকাশিত এক যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (EPI) মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ৯৪ হাজার মানুষের প্রাণ রক্ষা পাচ্ছে এবং ৫০ লাখ শিশুকে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। প্রতি ১ ডলার বিনিয়োগে স্বাস্থ্য খাতে ২৫ ডলার ফেরত আসছে—এটি অর্থনৈতিকভাবেও সন্তোষজনক। তবুও ৪ লাখ শিশুর টিকাদান অসম্পূর্ণ এবং ৭০ হাজার শিশু একেবারেই কোনো টিকা পায়নি, যা এক ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।

বিশেষ করে শহরাঞ্চলে টিকা না পাওয়ার হার গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি। শহরে মাত্র ৭৯ শতাংশ শিশু পুরোপুরি টিকা পেয়েছে, যেখানে গ্রামে এই হার ৮৫ শতাংশ। শহরের ২.৪ শতাংশ শিশু একটিও টিকা পায়নি এবং ৯.৮ শতাংশ শিশু সব ডোজ পায়নি।

এই অবস্থার পরিবর্তনে ইউনিসেফ, গ্যাভি ও ডব্লিউএইচও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে—জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করতে জনবল বৃদ্ধি, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, শহরাঞ্চলে ঘাটতি পূরণে অগ্রাধিকার, টিকা সরবরাহে সুনিশ্চিত ব্যবস্থা, এইচপিভি টিকাদানে জোর এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের ব্যবহার বাড়ানো। এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা গেলে ৯৫ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব।

এই বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, যেন প্রতিটি শিশুর একটি সুস্থ, সুরক্ষিত এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়।