জুলাই আন্দোলনে সোচ্চার ইরেশ যাকেরকে হত্যা মামলার আসামি করায় ফুঁসছে শোবিজ অঙ্গন

জুলাই আন্দোলনে যখন দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিবাদ উঠে আসে, তখন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক তারকাই সোচ্চার হন। তাদের মধ্যেই একজন ছিলেন অভিনেতা ও প্রযোজক ইরেশ যাকের। কিন্তু সেই আন্দোলনে যুক্ত একজন প্রতিবাদী কণ্ঠকে হত্যা মামলার আসামি করায় উত্তাল হয়ে উঠেছে শোবিজ জগত।

জুলাই মাসে রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে নিহত হন বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ। এই ঘটনায় করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকরভাবে এই তালিকায় রয়েছে ইরেশ যাকেরের নামও—তিনি ১৫৭ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি। নিহতের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী ২০ এপ্রিল মামলাটি দায়ের করেন।

এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন তার সহকর্মীরা। অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসে লেখেন, “ইরেশ সবসময় সত্যের পক্ষে থেকেছেন। আমরা শাহবাগে যখন বিপদের মুখে ছিলাম, তিনিই নিশ্চিত করেছিলেন যেন আমি নিরাপদে পৌঁছাতে পারি। গণভবনে যাবার চাপ উপেক্ষা করে তিনি ছাত্রদের পাশে দাঁড়ান। আজ যখন দেখি তাকে হয়রানি করা হচ্ছে, হৃদয় ভেঙে যায়।”

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “এই মামলা সরকার করেনি। যে কেউ মামলা করতে পারে, অনেকে সেটার অপব্যবহার করছে। তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হবে।”

পরিচালক আশফাক নিপুণ বলেন, “১ আগস্ট ফার্মগেটে আমি, আমার সহকর্মীরা এবং ইরেশ দাঁড়িয়েছিলাম জুলাই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে। তিনি বিটিভির শোক সভায় যাননি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক, কিন্তু হত্যা মামলা একেবারেই অযৌক্তিক।”

পরিচালক শিহাব শাহীন লিখেছেন, “ইরেশ যাকের ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠ। তার নামে হত্যা মামলা শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, ন্যায়ের পরিপন্থী।”

এমন সময় যখন প্রতিবাদের কণ্ঠকে দমন করার অভিযোগ উঠছে, তখন শোবিজ অঙ্গন থেকে স্পষ্ট বার্তা এসেছে—তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং সত্যের পাশে। ইরেশ যাকেরের পাশে দাঁড়িয়ে তারা আবারও প্রমাণ করেছেন, শিল্পী শুধু বিনোদনের মাধ্যম নন, বরং সমাজের ন্যায়বিচারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বরও।