হত্যাচেষ্টার মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের ১৭ তারকা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তোলপাড়

ঢাকাই চলচ্চিত্র অঙ্গন এখন এক ব্যতিক্রমী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বড় পর্দার জনপ্রিয় ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ উঠেছে সরাসরি হত্যাচেষ্টা’র মতো গুরুতর অপরাধে। এদের মধ্যে রয়েছেন নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, জায়েদ খান, নিপুণ আক্তার, সুবর্ণা মোস্তফা, রোকেয়া প্রাচী, সোহানা সাবা, মেহের আফরোজ শাওন, জ্যোতিকা জ্যোতিসহ আরও অনেকে।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঘটে যাওয়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেন এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত তারকারা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত হত্যাচেষ্টায় জড়িত ছিলেন—প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে।
মামলার তালিকায় আরও আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরকার সংশ্লিষ্ট ২৮৩ জন এবং অজ্ঞাতনামা তিন-চারশ’ ব্যক্তির নাম। বাদীর দাবি, এই তারকারা আওয়ামী লীগের অর্থায়নকারী হিসেবে কাজ করেছেন এবং তাদের অবস্থান আন্দোলনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “আমরা যদি সত্যিই হত্যাচেষ্টায় যুক্ত থাকতাম, তাহলে তদন্ত ছাড়াই এতদিনে প্রমাণ আসত। এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে ফেলার একটি উদাহরণ।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব কবির বিষয়টিকে সংবেদনশীল ও সম্ভাব্য রাজনৈতিক হয়রানি হিসেবে ব্যাখ্যা করে বলেন, “যদি অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়, তবে এটি সাংস্কৃতিক পরিসরের ওপর একটি সরাসরি আঘাত। আবার যদি সত্যি হয়, তাহলে তারকাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।”
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নতুন কিছু না হলেও, এই মামলার মতো উদাহরণ অভূতপূর্ব। একজন প্রবীণ অভিনেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “তারকাদের রাজনৈতিক মত থাকতেই পারে। কিন্তু সরাসরি সহিংসতার মতো অভিযোগ তাদের সামাজিক অবস্থানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।”
এই মামলার প্রেক্ষিতে সাংস্কৃতিক বলয়ের নিরপেক্ষতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, এবং রাজনৈতিক প্রভাব নতুন করে আলোচনায় এসেছে। আদালত ও তদন্ত সংস্থার ভূমিকার পাশাপাশি জনমতের প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে এই মামলার প্রভাব কতটা গভীর হবে, তা নির্ধারণ করবে।
এই ঘটনাটি শুধু একটি মামলা নয়—এটি সাংস্কৃতিক পরিসরে রাজনৈতিক প্রভাবের মাত্রা ও শিল্পীদের স্বাধীনতার সীমা নিয়েও একটি গভীর প্রশ্ন তুলে ধরছে।
আপনি চাইলে এর ভিত্তিতে একটি নিউজ ভিডিও স্ক্রিপ্ট বা ইনফোগ্রাফিকও তৈরি করে দিতে পারি—আপনার কোনটা লাগবে?
আপনার মতামত লিখুন