পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শাওন ও জায়েদ খানসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের বাংলাদেশ শাখার প্রেসিডেন্ট এম এ হাশেম রাজু দায়ের করেন। গত ২০ মার্চ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা আবেদন করার পর আদালত শাহবাগ থানাকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। এরপর ৩০ এপ্রিল আদালত শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর জখম–সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথাও বলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এ বি এম জোবায়ের জানান, শাহবাগ থানায় এ ঘটনার কোনো মামলা হয়েছে কি না, তা জানতে আদালতের নির্দেশে পুলিশ প্রতিবেদন দেয়। তাতে জানানো হয়, এ বিষয়ে আগে কোনো মামলা হয়নি। এরপর আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের নির্দেশ দেন।
বাদীর অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের’ বিদায়ের দাবিতে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শহীদ মিনার থেকে মিছিল শুরু হয়, যা পরীবাগের সামনে গেলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা তা বাধা দেয় এবং গুলি চালায়। এতে মিছিল অংশগ্রহণকারী আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিনের চোখে গুলি লাগে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন মামলার বাদী হাশেম রাজু।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, অভিযুক্তরা আওয়ামী সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের সক্রিয় সদস্য এবং ‘আলো আসবে’ নামক ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আন্দোলনকারী ছাত্রদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, নির্যাতন গ্লোরিফাই এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন অভিনয়শিল্পী রোকেয়া প্রাচী, মেহের আফরোজ শাওন, চঞ্চল চৌধুরী, রিয়াজ, ফেরদৌস, সাজু খাদেম, আশনা হাবীব ভাবনা, অরুনা বিশ্বাস, জ্যোতিকা জ্যোতি, শামীমা তুষ্টি, শমী কায়সার, সোহানা সাবা, সাংবাদিক মুন্নি সাহা, মিথিলা ফারজানা, মাসুদা ভাট্টি, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আবেদ খান, সন্তোষ শর্মা, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল হক ও ফরিদা ইয়াসমিন।
এ ছাড়া অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, লেখক জাফর ইকবাল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যবৃন্দ, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক জেলা জজ হেলাল চৌধুরী, পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা লাকী আক্তার এবং গণজাগরণ মঞ্চের সাবেক মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
এ ছাড়া মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা ওবায়দুল কাদের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ দলটির অনেক নেতাকেও আসামি করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন