হিমাংশী নারওয়াল: স্বামীর মৃত্যুর পর শান্তির বার্তা দেওয়ায় বিদ্বেষের শিকার

কাশ্মীরের পহেলগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ভারতীয় নৌ-বাহিনীর লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের স্ত্রী হিমাংশী নারওয়াল আজ সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন। সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে বিনয়কে। তার মৃত্যুর পরে ঘটনাস্থলে বিষণ্ণ চেহারায় বসে থাকা হিমাংশীর একটি ছবি ভাইরাল হয় এবং তা মানুষের সহানুভূতি অর্জন করে।
তবে কয়েকদিন পর হিমাংশী যখন প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন, তখন পরিস্থিতি বদলে যায়। তিনি বলেন, “আমি শুধু চাই পুরো জাতি তার জন্য প্রার্থনা করুক, সে যেখানেই থাকুক না কেন, যেন শান্তিতে থাকে।” তিনি আরও বলেন, “কারো প্রতি ঘৃণা থাকা উচিত নয়। আমি এটা ঘটতে দেখছি যে, লোকেরা মুসলিম বা কাশ্মীরিদের প্রতি ঘৃণা ছড়াচ্ছে। আমরা এটা চাই না। আমরা শান্তি চাই এবং কেবল শান্তিই চাই।”
এই মানবিক বক্তব্যের পরপরই তিনি কিছু রাজনৈতিক দল ও উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর কটাক্ষের শিকার হন। তাকে গালাগালি, চরিত্রহনন ও ঘৃণার মুখে পড়তে হয়, শুধুমাত্র শান্তির পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে।
ভারতের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “একজন তরুণ নৌ-সেনাকে হত্যা করা হয়েছে, আর এখন তার স্ত্রীকেও সমাজ হত্যা করছে—ঘৃণার মাধ্যমে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, যারা একজন শান্তিকামী নারীর প্রতি এমন আচরণ করছে, তারা কীভাবে সন্ত্রাসীদের থেকে আলাদা?
তিনি আরও অভিযোগ করেন, অনলাইনে যারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে তারা অনেক সময় সরকারদলীয় সমর্থক, এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই নীরবতা ও পক্ষপাতমূলক আচরণকে তিনি লজ্জাজনক ও অমানবিক বলে মন্তব্য করেন।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, সহানুভূতি ও মানবতার কণ্ঠ কত সহজেই বিদ্বেষের ঝড়ে হারিয়ে যেতে পারে। একজন বিধবার শান্তির আহ্বান সমাজে বিদ্বেষের প্রাচীরে ধাক্কা খাচ্ছে, যা গভীরভাবে উদ্বেগজনক।
আপনার মতামত লিখুন