আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত: বিএনপির প্রতিক্রিয়া ও বৈঠক

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৩:৫৭ অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত: বিএনপির প্রতিক্রিয়া ও বৈঠক

ছাত্র-জনতার দাবির মুখে জুলাই গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাকর্মীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব ধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীতেও উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন দিয়েছে।

শনিবার (১০ মে) রাতে যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে রাত ১১টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্ত বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী আনার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলটি মনে করছে, এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলকে শাস্তি দেওয়া যাবে।

গতকাল শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আদালতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাতে সম্মত থাকবে বিএনপির। দলের নেতারা বলেন, একমাত্র বিএনপি আইন-আদালতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিচার চেয়েছে এবং দেরি হলেও সরকার সেই পথে এগিয়েছে।

নিষিদ্ধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের বিচার কত দিন চলবে, এ বিষয়ে বিএনপির এক নেতা প্রশ্ন তুলে বলেন, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে, তবে সরকার স্পষ্টভাবে বলেনি যে কতদিন এই বিচার চলবে। তিনি আরও বলেন, “তাহলে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কি নির্বাচনও হবে না? ছাত্ররা যদি দাবি তোলে যে বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না, তাহলে কি সরকার তাও মেনে নেবে?”

এদিকে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি লিখিতভাবে দাবি করেছিল, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হবে।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকার চাইলে আইন-আদালতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে।

এছাড়া, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে তিন দিন ধরে টানা কর্মসূচি পালন করে। তবে এই আন্দোলনে অংশ নেয়নি বিএনপি। তবুও, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠে।

এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে, বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আন্দোলন এবং সরকারের সিদ্ধান্ত ‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচের’ মতো, কারণ নাগরিক পার্টি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা দল।