আন্তর্জাতিক মা দিবস আজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসার অকৃত্রিম প্রতীক মা
‘মা’—মাত্র একটি শব্দ হলেও এর গভীরতা অতল। এই শব্দের মাঝে লুকিয়ে থাকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, অপরিসীম স্নেহ ও মমতার ছোঁয়া। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের জায়গাটি জুড়ে থাকেন মা।
আজ রোববার (১১ মে) মে মাসের দ্বিতীয় রোববার হিসেবে সারাবিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মা দিবস। যুক্তরাষ্ট্রে সূচনা হলেও এখন বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার নানা আয়োজনে উদযাপিত হয় এই দিনটি। বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচি ও পারিবারিক আয়োজনে পালিত হচ্ছে মা দিবস।
সন্তানরা আজ মাকে উপহার, কার্ড বা ফুল দিয়ে জানাবে ভালোবাসা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, মায়ের প্রতি ভালোবাসা কেবল একটি দিনে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। যে মা সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেন, নিজেকে বিসর্জন দিয়ে তাকে বড় করে তোলেন, তাঁর প্রতি ভালোবাসা ও যত্ন হওয়া উচিত প্রতিটি মুহূর্তে।
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ধর্মে ‘মা’ বারবার উঠে এসেছে শ্রদ্ধার আসনে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদসহ অনেক কবি মাকে নিয়ে লিখেছেন হৃদয়স্পর্শী কবিতা। ইসলাম ধর্মেও মা-বাবার প্রতি সদাচরণকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সুরা লোকমানে বলা হয়েছে, ‘মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে গর্ভধারণ করে।’
বিশ্বজুড়ে ‘মা’ ডাকের ভাষাভেদে রয়েছে দারুণ মিল—বাংলায় ‘মা’, ইংরেজিতে ‘মাম’, চীনা ভাষায় ‘মামা’, জার্মান ভাষায় ‘মুটার’, আরবি ভাষায় ‘উম্মি’। ভাষাবিদ রোমান জ্যাকবসনের মতে, শিশুর প্রথম শব্দগুলো নাকে ও মুখে জমে থাকা বাতাস থেকে উদ্ভূত হয়, যার ফলে ‘ম’ ধ্বনি স্বাভাবিকভাবেই উৎপন্ন হয়।
আধুনিক মা দিবসের সূচনা হয়েছিল ১৯০৮ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় এক স্কুলশিক্ষিকা অ্যানা জারভিস তার মায়ের স্মরণে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে। পরে ১৯১৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
এই দিনে প্রত্যাশা, পৃথিবীর প্রতিটি মা যেন অনুভব করেন—তাঁদের সন্তানের ভালোবাসা শুধু কথায় নয়, প্রতিদিনকার যত্ন, শ্রদ্ধা ও কর্মেও প্রকাশিত হয়।


আপনার মতামত লিখুন