তারেক রহমানের মন্তব্য: গণতন্ত্রের পক্ষে জনগণের অটুট অবস্থান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “মানুষের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে বিগত দেড় দশক যে দলটি দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন-শোষণ চালিয়েছিল, বাংলাদেশের জনগণ তাদের অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”

তিনি বলেন, দেশের জনগণ দুটি বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত– এক, বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে আর কেউ যেন তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে না পারে। দুই, গণতন্ত্রবিরোধী পলাতক শক্তি যাতে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

শনিবার (১০ মে) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বিএনপির উদ্যোগে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে ত্রিপিটক পাঠ করেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা।

তারেক রহমান বলেন, “এই দুই বিষয়ে জনগণ আর কোনো আপস মানতে রাজি নয়। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি এটি উপলব্ধি করি। বিএনপিসহ দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল জনগণের এই দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।” তিনি আরও বলেন, যারা বারবার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, অবৈধ সংসদ বা সরকার গঠন করেছে এবং যারা সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, “দেশের জনগণ ও সরকার কোনোভাবেই গুম, খুন ও অপহরণ, দুর্নীতি, টাকা প্রচার, আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতাদের পলাতক-পরাজিত অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না।”

ফ্যাসিবাদী শাসনের পর গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে গণমাধ্যমের ভূমিকা

ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর দেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনের দুষ্কর্মগুলো প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রচার ও আলোচনায় রাখা দরকার।” তিনি বলেন, “গত ১৫ বছর যা হয়েছে এবং জুলাইয়ে যা হয়েছে তা গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আলোচনা রাখা দরকার।”

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ শাসনামলে বিভিন্ন সময় দেশে জঙ্গি নাটক কিংবা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনের লুটপাট থেকে জনগণের দৃষ্টিতে অন্যদিকে রাখতে চেয়েছিল।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে নাগরিক তদন্ত কমিশন গঠন পরিকল্পনা

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সর্বধর্মীয় একটি নাগরিক তদন্ত কমিশন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তারেক রহমান।

বিএনপি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ

তারেক রহমান আরও বলেন, “কেউ যেন আপনার-আমার আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার, ভোটের অধিকার কুক্ষিত করে রাখার ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য জনগণের দায়বদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা প্রত্যেকটি মানুষ…. এই ঘরে যে মানুষগুলো আমরা উপস্থিত আছি, এই ঘরের বাইরে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা যে যেখানেই আছি না কেন, যে যার অবস্থান থেকে সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে… আপনাদের সকলের কাছে আমি আজ সেই আহ্বান জানাই।”

বিএনপি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সফল দেখতে চায়

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সফল দেখতে চায়। তবে সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের কাছে স্বচ্ছ ধারণা থাকার জন্য বিএনপি তাদের একটি কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে।

ধর্ম বিষয়ক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতৃত্বের বক্তব্য

বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সহ সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সুভাষ চন্দ্রা চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক প্রমুখ বক্তব্য দেন।