পেহেলগাম হামলা ঘিরে উত্তেজনায় যুদ্ধবিরতি, তবে স্থগিতই থাকছে সিন্ধু পানিচুক্তি

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ২:৪০ অপরাহ্ণ
পেহেলগাম হামলা ঘিরে উত্তেজনায় যুদ্ধবিরতি, তবে স্থগিতই থাকছে সিন্ধু পানিচুক্তি

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দু’পক্ষই এক পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে সিন্ধু পানিচুক্তি-সহ গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বিষয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কার্যত স্থগিত রয়েছে। দুই দেশই শিগগির এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় বসবে বলে জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের।

যদিও যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বড় ধরনের সামরিক সংঘাত এড়ানো গেছে, তবুও ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা থেকে পিছু হটার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলা শান্তি আলোচনার সময়ই এই অবস্থান স্পষ্ট করেছে নয়াদিল্লি।

রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার (১০ মে) ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক দপ্তরের শীর্ষ পর্যায়ের এক বৈঠকে দুই দেশ সমুদ্র, আকাশ ও স্থলপথে সব ধরনের সামরিক তৎপরতা বন্ধে সম্মত হয়েছে। কিন্তু ৬৫ বছর আগের ঐতিহাসিক সিন্ধু চুক্তি পুনর্বহালের বিষয়ে ভারত অনড় রয়েছে।

১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদী ও এর ছয়টি শাখানদী (সিন্ধু, চন্দ্রভাগা, শতদ্রু, ঝিলাম, ইরাবতী, বিপাশা) থেকে পাকিস্তান পানি পেত। এতে পাকিস্তানের কোটি মানুষ উপকৃত হতেন। কিন্তু পেহেলগাম হামলার জেরে ভারত একতরফাভাবে এই চুক্তি স্থগিত করে, যার ফলে পাকিস্তানে পানির প্রবাহে বড় ধরনের বিঘ্ন দেখা দিয়েছে।

চেনাব নদীর পানিপ্রবাহে বিরাট পতন
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, গেল ৪ মে রোববার চেনাব নদীর পাকিস্তান অংশে পানিপ্রবাহ ছিল ৩৫ হাজার কিউসেক। কিন্তু পরদিন সোমবার তা কমে মাত্র ৩,১০০ কিউসেকে নেমে আসে।

পাঞ্জাব সেচ বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে চেনাব নদী থেকে পানি প্রত্যাহার শুরু করেছে এবং নিজেদের বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোতে পানি ধরে রাখছে। এতে পাকিস্তানের চেনাব অববাহিকায় পানির প্রবাহ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

“সিন্ধু চুক্তি বাতিল একটি গুরুতর আন্তর্জাতিক লঙ্ঘন। তারা (ভারত) এটা করতে পারে না।”

এই পরিস্থিতিতে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও কূটনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে না। পানিচুক্তি স্থগিত থাকা অবস্থায় পাকিস্তানে খরার সম্ভাবনা এবং কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।