নদী ধ্বংস অধর্ম: আন্তঃধর্মীয় বিতর্কে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ৩:১০ অপরাহ্ণ
নদী ধ্বংস অধর্ম: আন্তঃধর্মীয় বিতর্কে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, দেশের বিভিন্ন নদীর উপর উন্নয়নের নামে নির্মিত সেতুগুলো প্রকৃতপক্ষে নদীর ক্ষতি করছে, যা একপ্রকার “অধর্ম”। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “পদ্মা সেতু দিয়ে কি পদ্মা নদীর ক্ষতি করছেন না? যমুনার তো ইতোমধ্যে ক্ষতি হয়ে গেছে।” বরিশাল থেকে ভোলার পথে আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর নতুন সেতুর পরিকল্পনাকেও তিনি নদী বিনাশের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘৬ষ্ঠ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিতর্ক উৎসব ২০২৫’-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ বছরের বিতর্কের মূল বিষয় ছিল: ‘সভ্যতার বিবর্তনে নদী ও ধর্ম’।

ফরিদা আখতার বলেন, “নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, দূষিত হচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে—এটা অধর্মেরই অংশ। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গার অবস্থা এতটাই খারাপ যে লঞ্চে বসে থাকা যায় না। নদী দূষণের ফলে প্রাণি মারা যাচ্ছে, মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে এখনই নদী রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে।”

প্রধান বক্তা নদী গবেষক শেখ রোকন বলেন, “সব ধর্মেই নদীর পবিত্রতা ও গুরুত্ব রয়েছে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা—সবই সভ্যতা ও ধর্ম প্রসারে ভূমিকা রেখেছে।” তিনি উল্লেখ করেন, হযরত শাহজালাল, শাহ মখদুমসহ অনেক ধর্মপ্রচারকই নদীপথেই এসেছিলেন।

বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা বলেন, “ধর্ম ও নদীর যুক্তি তুলে ধরা একটি চমৎকার ধারণা। এ বিষয়ে আরও গবেষণা ও কাজ করা উচিত।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন্স ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি আসমা সুলতানা লিজা। আলোচনায় অংশ নেন বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আবু সায়েম, আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ এবং ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহিদুল হাসান।

বিতর্ক উৎসবে দেশের ৩২টি বিতর্ক দল অংশ নেয়। চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের দল, আর রানার্সআপ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূরুদ্দীন মুহাম্মাদ।