আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ: গেজেট প্রকাশ, গণমাধ্যমেও বিধিনিষেধ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ৫:২৫ অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ: গেজেট প্রকাশ, গণমাধ্যমেও বিধিনিষেধ

অন্তর্বর্তী সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গেজেট অনুযায়ী, দলটির পক্ষে বা সমর্থনে কোনো ধরনের প্রচারণা, প্রেস বিবৃতি, মিছিল, সভা-সমাবেশ, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সংশোধিত ধারা অনুযায়ী, রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করাও এখন দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনজীবীরা বলছেন, এই আইনের আওতায় শুধু রাজনৈতিক প্রচারণাই নয়, বরং গণমাধ্যমে দলটির কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ প্রচার করলেও শাস্তির মুখে পড়তে হবে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “সত্তা ও সংগঠন আসলে একই বিষয়। রাজনৈতিক দলও একটি এনটিটি। এনটিটিকে নিষিদ্ধ করা মানেই তার সকল কর্মকাণ্ড, এমনকি তা প্রচার করাও আইনত অপরাধ। সংবাদ প্রচার করলে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাত বছর এবং সর্বনিম্ন দুই বছরের কারাদণ্ড, সেইসাথে অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই আইনের ফলে কোনো জাতীয় দিবসে আওয়ামী লীগের ঘোষণাও প্রচারযোগ্য নয়। এমনকি ইতিহাস লেখার সময়েও ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত দল আওয়ামী লীগ’ এইভাবে উল্লেখ করতে হবে, না হলে মামলার আশঙ্কা থাকবে।”

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সংশোধিত ৯ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি নিষিদ্ধ দলকে সমর্থন করে বক্তৃতা দেন, সভা আয়োজন করেন, বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রচার চালান—তাহলে তা হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধে অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

এই আইনে প্রথমবারের মতো কোনো দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত হলো। এর আগে ২০০৯ সালের মূল আইনে সন্ত্রাসী সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ থাকলেও তাদের কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে কিছু উল্লেখ ছিল না।

তবে সরকার বলছে, এই সিদ্ধান্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “এই প্রজ্ঞাপন শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে; অন্য কোনো দলের মতপ্রকাশ, সমালোচনা বা বিশ্লেষণের স্বাধীনতা এতে খর্ব হয় না।”

এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। এবার অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যক্রম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।