আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নাটকের আড়ালে সরকার জনগণের দৃষ্টি ঘোরাচ্ছে: মির্জা আব্বাস

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ৫:০৩ অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নাটকের আড়ালে সরকার জনগণের দৃষ্টি ঘোরাচ্ছে: মির্জা আব্বাস

সোমবার (১২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন পিন্টুর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে দেশে সাজানো নাটক চলছে। এর মাধ্যমে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘোরানো হচ্ছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “একটি অজনপ্রিয় দল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপিকে হেয় করছে। এমনকি দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এমন উপদেষ্টারা নিচ্ছেন যারা বাংলাদেশের নাগরিক নন। মনে হচ্ছে দেশে এক ধরনের ঔপনিবেশিক শাসন চলছে।”

ডিএমপির নিষিদ্ধ এলাকায় এনসিপির বিক্ষোভ নিয়ে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, “সরকার নিজেই একপক্ষকে সুযোগ দিচ্ছে, আর অন্যপক্ষকে দমন করছে।”

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে “নাটক” আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা অতীতেও এমন অপকর্ম ঢাকতে জনগণের দৃষ্টি সরাতে নানা কৌশল নিয়েছেন। বিএনপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধিতা না করলেও একটি গোষ্ঠী এই ইস্যুকে ব্যবহার করে বিএনপিকে টার্গেট করছে।”

তিনি আরও বলেন, “যারা বলে বিএনপি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করেছে তারা আসলে বিএনপিকে হিংসা করে। বিএনপি এমন একটি দল, যারা ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে। তাদের পুনর্বাসন করবে, এটা কল্পনাও করা যায় না।”

মির্জা আব্বাস বলেন, প্রশাসন থেকে বিএনপি-সমর্থকদের সরিয়ে আওয়ামী ও জামায়াতপন্থিদের বসানো হচ্ছে। এ সময় তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ যাত্রা এবং সরকার এতে কিছু না জানার ভান করছে বলেও মন্তব্য করেন।

সেন্টমার্টিন ও সাজেক বিষয়ে এনসিপির নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। “বিশ্বে ‘মানবিক করিডোর’ বলে কিছু নেই। এসব নতুন নতুন নাম দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে খেলা করা হচ্ছে,” বলেন তিনি। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো করিডোর দেওয়ার অধিকার সরকারের নেই বলেও মন্তব্য করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, “দেশে সন্দেহভাজন বিদেশিদের আগমন বেড়েছে, নানা মিশন চালু হচ্ছে, সরকার কোনো দেশপ্রেমিক ভূমিকা রাখছে না। এসব অপকর্মের পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য পরিষ্কার— দেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কোনো বিশেষ মহলের স্বার্থে কাজ করছে তারা।”

জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামী আন্দোলনের নীরবতা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই করিডোর ইস্যুতে বিএনপি ছাড়া কেউ কথা বলছে না। বিএনপিকে শেষ করে দিলে দেশ লুটে খাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে—এই লক্ষ্যেই কাজ করছে বর্তমান সরকার।”

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ওলামা দলের মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হকসহ বিভিন্ন নেতা-কর্মী।