মাগুরায় গেজেটভুক্ত আহতদের চেক বিতরণে বিতর্ক: সুপারিশ উপেক্ষা, বিতর্কিত নাম অন্তর্ভুক্ত

২০২৪ সালের জুলাই মাসের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণের লক্ষ্যে গঠিত মাগুরা জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে এক বিতর্কিত ব্যক্তির নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বিতর্কিত ব্যক্তি মো. সুজন মাহামুদ, যিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মাগুরা পৌর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসত্য তথ্য দিয়ে গেজেটভুক্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর জেলা প্রশাসন তার অনুকূলে অনুদানের চেক বিতরণ কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করে এবং বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়।
গত ১৩ মে মাগুরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘গ’ ক্যাটাগরির গেজেটভুক্ত আহতদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। বিতরণ চলাকালেই সুজন মাহামুদের নাম নিয়ে আপত্তি ওঠে, যা বিতর্কের জন্ম দেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশ তালিকায় সুজন মাহামুদের নাম ছিল না। তবে চূড়ান্ত গেজেটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তার জন্য বরাদ্দকৃত চেক জেলা প্রশাসনে পৌঁছায়।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাই কমিটি স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে একটি নির্ভরযোগ্য তালিকা তৈরি করেছিল। তবে মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেটে ওই তালিকার বাইরে কিছু নাম যুক্ত হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে।
মাগুরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. অহিদুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। কেউ যেন অনৈতিকভাবে সরকারি সুবিধা না পান, তা নিশ্চিত করতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।”
মাগুরা সিভিল সার্জন অফিসের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হায়াত হোসেন জানান, “বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। যাচাই-বাছাই ছাড়া কাউকে গেজেটভুক্ত করা হবে না—এ বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।”
উল্লেখ্য, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী আহত ও শহিদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের উদ্দেশ্যে সরকার প্রতিটি জেলায় যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করে। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে এবং জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
আপনার মতামত লিখুন