ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় সেনা অভিযানে নিহত ১৮ বিদ্রোহী, বেসামরিক হতাহতের অভিযোগ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৬:১২ অপরাহ্ণ
ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় সেনা অভিযানে নিহত ১৮ বিদ্রোহী, বেসামরিক হতাহতের অভিযোগ

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় পাপুয়া রাজ্যে অভিযান চালিয়ে অন্তত ১৮ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এই অভিযানে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলেও বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন এক সরকারি কর্মকর্তা।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ক্রিস্টোমেই সিয়ানতুরি জানান, বুধবার চালানো এই অভিযানে অ্যাসল্ট রাইফেল, তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে। তবে এই অভিযানে সেনাবাহিনীর কোনও সদস্য হতাহত হননি।

রয়টার্স জানিয়েছে, সেনা অভিযানের বিষয়ে পাপুয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের একটি স্থানীয় সংগঠন জানিয়েছে, সেনা অভিযানের সময় বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। স্থানীয় গির্জার সূত্রে তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সংঘর্ষের পর ওই এলাকা থেকে প্রায় এক হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সংগঠনটির পাপুয়া শাখার প্রধান রোনাল্ড রিচার্ড জানান, গ্রামবাসীরা যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন এই অভিযান চালানো হয়। তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, সহিংসতার এই চক্র বন্ধ হওয়া দরকার। এছাড়া গুলিতে এক শিশুর কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি, যদিও কার গুলিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পাপুয়া অঞ্চলটি পাপুয়া নিউ গিনির সঙ্গে সীমান্তবর্তী। ১৯৬৯ সালে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত এক গণভোটের মাধ্যমে অঞ্চলটি ইন্দোনেশিয়ার নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে অনেকেই সেই ভোটকে অবৈধ মনে করেন। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এই অঞ্চলের স্বাধীনতার দাবিতে বহু বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহীরা।

বিগত সময়ে বিদ্রোহীরা বেশ কিছু বিদেশিকে জিম্মি করেছে। ১৯৯৬ সালে তারা ২৬ জন বন্যপ্রাণী গবেষককে জিম্মি করেছিল। সম্প্রতি ১৯ মাস পর নিউজিল্যান্ডের এক পাইলটকে মুক্তি দিয়েছে তারা।

গত মাসেও পাপুয়ার বিদ্রোহীরা দাবি করে, তারা অন্তত ১৭ জনকে হত্যা করেছে। তারা জানায়, নিহতরা আসলে ইন্দোনেশিয়ার সেনাসদস্য, যারা স্বর্ণ খনিতে শ্রমিক সেজে সেখানে অবস্থান করছিলেন।

পাপুয়ায় চলমান এই সহিংসতা আবারও আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, বিশেষ করে বেসামরিক হতাহতের ঘটনায়।