উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে ভারত কঠোর বিধিনিষেধ জারি

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৫:৪৩ অপরাহ্ণ
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে ভারত কঠোর বিধিনিষেধ জারি

ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য আমদানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি কার্যত বন্ধের পথে ঠেকেছে। শনিবার এএনআই নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থাটি জানায়, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও পশ্চিমবঙ্গের ফুলবাড়ি ও চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আর বাংলাদেশি পণ্য ঢুকতে পারবে না। ভারতের মাধ্যমে বাংলাদেশে রপ্তানির ৯৩ শতাংশ পণ্যই আগে এসব বন্দর দিয়ে যেত।

এখন থেকে এসব পণ্য শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর বা মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা বন্দর দিয়ে পাঠানো হবে। ভারতের অভিযোগ, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন একতরফাভাবে ভারতের বাজারে সুবিধা পাচ্ছে, কিন্তু ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছ থেকে একই সুবিধা মেলেনি। ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বাণিজ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পারস্পরিক সুবিধা না থাকলে একতরফা ছাড় আর হবে না।

ভারত আরও অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ ট্রানজিট ব্যবহারে প্রতি কিলোমিটারে টনপ্রতি ১.৮ টাকা ফি নিচ্ছে, যেখানে ভারতের অভ্যন্তরীণ হার মাত্র ০.৮ টাকা। এতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্প খাতে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, মেলামাইন, আসবাবপত্র, জুস, কোমল পানীয়, বেকারি ও প্রসেসড ফুডসহ একাধিক পণ্য ভারতে রপ্তানি করতে বাধা সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৭৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি হয়।

ভারতীয় বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক এ সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বাংলাদেশের জন্য এটি বড় আর্থিক ধাক্কা হলেও, ভারতের স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য বাজার দখলের সুযোগ হতে পারে।