দিনাজপুরে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সেচ সুবিধায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন

দিনাজপুরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) স্বল্পমূল্যে সেচ সুবিধা ও কৃষি সহায়ক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনার ফলে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে এবং কৃষি উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪১৭ হেক্টর, যার পুরোই সেচের আওতায় আনা হয়েছে। জেলার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৭টি পরিবার সেচ সুবিধা গ্রহণ করছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। একর প্রতি সেচ সুবিধার খরচ মাত্র ২৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা, যা কৃষকদের জন্য খুবই স্বল্পমূল্য। কৃষকরা এ সুবিধায় দারুণভাবে উপকৃত হচ্ছেন।
জেলায় বিএমডিএর অধীনে রয়েছে ১,৬৬৮টি গভীর নলকূপ এবং নদীতে স্থাপন করা হয়েছে ১৩৭টি লো-লিফট পাম্প। এছাড়া, ১৩৭টি সেচ-নলকূপকে খাবার পানির সরবরাহ স্থাপনায় রূপান্তর করা হয়েছে, যেখান থেকে প্রায় ৪৮ হাজার ৩৯১ জন মানুষ উপকৃত হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে ৭৭ হাজার ৮২৭ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়েছে।
বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ১২৭ কিলোমিটার খাস খাল ও খাড়ি পুনঃখনন করেছে এবং ৪১টি খাস মজা পুকুর পুনঃখনন করেছে। গ্রামীণ যোগাযোগ সহজ করতে ১৪টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য ১২টি ক্রস ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণেও বিএমডিএ গুরুত্ব দিয়েছে; তারা রোপণ করেছে ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৬২৫টি বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছ। বজ্রপাত প্রতিরোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় প্রায় ২ লাখ তালগাছ লাগানো হয়েছে।
বিএমডিএর বিরল জোনের সহকারী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বোরো ছাড়াও ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের জন্য কৃষকদের সেচ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেচ সুবিধার পাশাপাশি নানা উন্নয়নমূলক কার্যক্রমেও বিএমডিএ অংশ নিচ্ছে এবং দিনাজপুরের কৃষকদের কাছে এটি এখন আস্থার নাম। তিনি আরও জানান, বিরল উপজেলার ধুকুরঝাড়ি থেকে বিরল উপজেলা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে লাগানো তালগাছ ইতোমধ্যে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে এবং এই কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন